প্রধান মেনু

অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির বাণী

ঢাকা,  ৩ চৈত্র (১৭ মার্চ) : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ‘অমর একুশে বইমেলা ও অনুষ্ঠানমালা ২০২১’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :“বাংলা একাডেমির উদ্যোগে প্রতিবারের ন্যায় এবছরও ‘অমর একুশে বইমেলা ও অনুষ্ঠানমালা ২০২১’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। অমর একুশে বইমেলার প্রাক্বালে মহান ভাষা আন্দোলনে অমর শহিদদের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্ৰদ্ধা।

বাঙালির সাহিত্য-সংস্কৃতির পাদপীঠ বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার পর থেকে মহান ভাষা আন্দোলনের  স্মৃতিকে নানাভাবে ধারণ করে আছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলা একাডেমি বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির উৎকর্ষ সাধনে নিরবচ্ছিন্ন দায়িত্বপালন করে আসছে। এ বছর বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের স্রষ্টা এবং বাঙালি জাতির মন ও মানস গঠনে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। তিনিই সর্বপ্রথম ১৯৪৮ সালে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু সর্বপ্রথম বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় ‘বাংলা সাহিত্য সম্মেলন’ উদ্বোধন করেন। ভাষা শহিদদের রক্তস্নাত পথ ধরে গড়ে ওঠা বাংলা একাডেমি বাংলা ভাষা-সাহিত্য, শিল্প-সংস্কৃতি বিকাশে অনন্য একটি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া, পৃথিবীর অন্যান্য ভাষার সাহিত্য, সংস্কৃতি, জীবনাচার ও জীবনসংগ্রাম অনুবাদের মাধ্যমে বৈচিত্র্যপূর্ণ বাঙালি সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করছে প্রতিষ্ঠানটি ।

প্রাচীন চর্যাপদের পদকর্তারা প্রাকৃতজনের মুখের ভাষাকে সাহিত্যের ভাষায় রূপ দিয়ে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির যাত্রাপথের সূচনা করেছিলেন। সেই বাংলা সাহিত্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, শামসুর রাহমান প্রমুখের হাত ধরে বিশ্বের বুকে আজ মর্যাদাশীল ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সাহিত্যচর্চা, সৃজনশীল ও মননশীল লেখকদের বিকাশ ও অধিকার সুরক্ষার ক্ষেত্র হিসেবে অমর একুশে বইমেলা এক অনন্য আয়োজন। সারাবিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের প্রাণের উৎসব ‘অমর একুশে বইমেলা’ বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক-বাহক হয়ে উঠবে – এ প্রত্যাশা করি।

আমি ‘অমর একুশে বইমেলা ও অনুষ্ঠানমালা ২০২১’-এর সার্বিক সফলতা কামনা করি।

জয় বাংলা।

খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”