প্রধান মেনু

অবহেলিত দক্ষিণ খুলনায় নজর দেবেন আক্তারুজ্জামান

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি॥ মো. আক্তারুজ্জামান একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হলেও তার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ও আত্মবিশ্বাস প্রবীণ রাজনীতিকদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। তিনি ইতোমধ্যে নির্ণয় করছেন তার আসনের সার্বিক সমস্যাদির খুঁটিনাটি দিকএবং তা থেকে উত্তরণের উপায়। আমাদের সময়ের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় জানিয়েছেন তার আবেগঘন অনুভূতির কথা। বলেছেন কীভাবে দক্ষিণ খুলনার এ অবহেলিত জনপদের উন্নয়ন
করবেন। হলফনামা অনুসারে আক্তারুজ্জামান খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার (খুলনা-৪) রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা। তবে তিনি নির্বাচনে অংশ নেন খুলনা-৬ আসনে। এটি নির্দ্বিধায় বলা যায়, অনেক বাধার মধ্যেও রাজনীতির ময়দানে টিকে থাকার পুরস্কার পেয়েছেন। সমালোচকদের মুখে ছাইচাপা দিয়ে বাগিয়ে নেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। এ মনোনয়নের জন্য গত ১০ বছর এলাকার মাটি ও মানুষের সঙ্গে গড়ে তুলেছেন আত্মার সম্পর্ক। এলাকাবাসীর মতে, দুই প্রবীণ রাজনীতিক খুলনা-৬ আসনে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তারা এতটাই দুর্নীতি-দখলবাজি করেছেন যে, মানুষ ছিল অতিষ্ঠ। নতুন মুখের কাছে পুরনোদের কর্মকা-ের প্রতিফলন দেখতে চান না তারা। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এমপি হিসেবে প্রথমে কোন কাজ করতে চান, জানতে চাইলে এই তরুণ এমপি বলেন, জোয়ারভাটার এ এলাকার ৫৫ কিলোমিটার ওয়াপদার বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে। খুলনা-৬ ঘূর্ণিঝড় আইলা- সিডরে অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত একটি অঞ্চল। অথচ এ বাঁধ নিয়ে চলেছে নানা তালবাহানা।
তিনি চান, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে যেন এ বাঁধ নির্মিত হয়। নিজে ঠিকাদার, কেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নয়, জানতে চাইলে মৃদু হেসে বলেন, এই বাঁধ নিয়ে অতীতের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়।

পাইকগাছা, কয়রাবাসী সব জানে। সুন্দরবনঘেঁষা কয়রা উপজেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি, গোলখালীতে একটি
পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণের। আক্তারুজ্জামান এই কেন্দ্র নির্মাণে জোর দেবেন। তিনি চান সড়কপথেই যেন সুন্দরবন পর্যটকদের চাহিদা মেটাতে পারে। এ জন্য জায়গাও নির্ধারণ করা আছে বলে জানান তিনি। জাতীয় সংসদে দক্ষিণ খুলনার এই নতুন মুখ পাইকগাছার দুর্গম এলাকাখ্যাত দেলুটি ইউনিয়নের দারুণমল্লিক থেকে পাইকগাছা উপজেলা সদরে আসার শর্টকাট ওয়ে বের করে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে চান। তিনি বলেছেন, খুলনা-কয়রা রাস্তার শর্টকাট ওয়ে বের করে তা ‘হাইওয়ে’তে রূপ দিতে চান।

অগ্রজরা বিশেষ করে শিক্ষক নিয়োগ ও প্রকল্প বরাদ্দে সীমাহীন দুর্নীতি করেছেন প্রায় প্রকাশ্যেই। এখনো চাকরিপ্রত্যাশীরা টাকা ফেরত পেতে দেনদরবার চালিয়ে যাচ্ছেন। বরাদ্দের টাকা শেষ হলেও কাজ শুরু হয়নি। আপনার ভূমিকা কী হবে? জানতে চাইলে তরুণ এমপি বলেন, এ ক্ষেত্রে আমার দলের লোকও যদি নিয়োগ পান তবে তা হবে টাকা ছাড়াই। যোগ্যতা ও মেধাকেই প্রাধান্য দেবেন। তিনি বললেন, এ ধরনের বিতর্কিত একটি ঝুলে থাকা নিয়োগ তিনি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করছেন। বরাদ্দকৃত অর্থ বা খাদ্যপণ্যের সঠিক ব্যবহার করা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবেন বলে দাবি করেন তিনি।

আক্তারুজ্জামান জানান, সুন্দরবনকে রক্ষা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, পাইকগাছা-কয়রায় স্টেডিয়াম, ফায়ার সার্ভিস, খাবার পানির সুব্যবস্থাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। ডিজিটাল পাইকগাছা-কয়রা বিনির্মাণে দুই উপজেলায় মানসম্মত সাইবার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করবেন। মাদকের বিরুদ্ধে চলবে আপসহীন যুদ্ধ। বখে যাওয়া ও মাদকাসক্ত যুবকদের সংশোধনে মনোবিজ্ঞানীদের মাধ্যমে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করে তাদের কর্মমুখী করার অক্লান্ত চেষ্টা থাকবে তার। বেকার আর মাদকাসক্তরা সমাজের বোঝা নয়, তাদের সম্পদে পরিণত করতে চান তরুন এই এমপি।