অবশেষে পদত্যাগ করলেন সৈয়দপুর সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ

নীলফামারী প্রতিনিধি ॥ অবশেষে পদত্যাগ করলেন নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন। ১ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) সৈয়দপুর কলেজের সভাপতি ও সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে প্রেরিত এক পদত্যাগ পত্রের মাধ্যমে এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। পদত্যাগ পত্রে অধ্যক্ষ নিজের স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে তা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪ টার দিকে সৈয়দপুর শহরের শহীদ ক্যাপ্টেন সামসুল হুদা মৃধা সড়কের শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ পরিষদ কার্যালয়ে সহকর্মী অধ্যাপিকা সুলতানা নওরোজ রুমি (সমাজ বিজ্ঞান) সহ আপত্তিকর অবস্থায় জনতার হাতে আটক হন সৈয়দপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন। যা তাৎক্ষনিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিডিও ও ছবি আকারে ছড়িয়ে পড়ে এবং সেদিনই দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ, ফটো বাংলা এজেন্সি (পিবিএ) সহ বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ আকারে প্রকাশ পায়।
এর পর থেকে শুরু হয় অধ্যক্ষ ও অধ্যাপিকার অপকর্মের বিচার ও পদত্যাগ দাবিতে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল। শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। উত্তাল হয়ে উঠে কলেজ ক্যাম্পাসসহ পুরো শহর। এমতাবস্থায় কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কলেজে উপস্থিত হয়ে ঘটনা তদন্তের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার, সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আহসান হাবিব ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রেহেনা ইয়াসমিন এই ৩ জনের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন।
এই কমিটি ৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও সে বিষয়ে কোন প্রতিবেদন না দেয়ার প্রেক্ষিতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর কলেজ ক্যাম্পাসে আবারও বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।
এ সময় কলেজের জমিদাতার ওয়ারিশরাসহ স্থানীয় এলাকাবাসী ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদক শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং সমাবেশ করে অপকর্মকারী অধ্যক্ষ ও অধ্যাপিকার দ্রুত বিচার দাবি করেন। এ পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে অধ্যক্ষ পদত্যাগ পত্র দেওয়ায় বিষয়টি শহর জুড়ে বেশ চাউর হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) পরিমল কুমার সরকার মুঠোফোনে জানান, এ সংক্রান্ত একটি পত্র আমাদের হস্তগত হয়েছে। অধ্যক্ষ তার প্রতিনিধি ফারুক প্রিন্টার্স এর স্বত্বাধিকারী এম ওমর
ফারুকের মারফত তা পাঠিয়েছেন। পরবর্তীতে উপজেলা পরিষদের অফিস সুপার (ওএস) শামীম আহমেদ মুঠোফোনে অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত হন। এসময় অধ্যক্ষ প্রেরিত পদত্যাগ পত্রটি তার বলে স্বীকার করেন।
ইউএনও আরও জানান, অধ্যক্ষের পদত্যাগ পত্রটি গ্রহণ করা হয়েছে এবং তার পদ এখন থেকে শুন্য বলে গণ্য হবে। তার পরিবর্তে কলেজের উপাধ্যক্ষ নার্জিজ বানু ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবেন।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাখাওয়াৎ হোসেন খোকনের সাথে তার মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি পদত্যাগ করেছি। আমি এখন বেশ অসুস্থ।