প্রধান মেনু

অবকাঠামো নির্মাণ করাই বিচার বিভাগের শেষ দায়িত্ব নয় — আইনমন্ত্রী

ঢাকা, ৩০ আশ্বিন (১৫ অক্টোবর) : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিচার বিভাগের উন্নয়ন হলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুদৃঢ় হওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রের চার মূলনীতি সুপ্রতিষ্ঠিত হবে, রাষ্ট্রের প্রধান তিনটি অঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে, গণতন্ত্রের সঠিক চর্চা হবে। অবকাঠামো নির্মাণ করাই বিচার বিভাগের শেষ দায়িত্ব নয় বললেন মন্ত্রী। পটুয়াখালীতে ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত চার তলা বিশিষ্ট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আজ ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা-যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হবে- এই সাংবিধানিক অঙ্গীকারের আলোকে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। কারণ আইনের শাসনের মধ্যেই নিহিত রয়েছে আইনের প্রয়োগ ও কার্যকারিতা। যে সমাজে আইনের শাসন নেই, সেখানে আইনের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত। আইন মানুষকে যেমন নিয়ন্ত্রণ করে, তেমনই মর্যাদাবান ও পরিশীলিত করে। আইন যেখানে অচল, মানবাধিকার সেখানে ভূলুণ্ঠিত। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মধ্যেই নিহিত রয়েছে সমাজ-সভ্যতার ক্রমবিকাশ। তিনি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সাথে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সাথে বিচার বিভাগের মানোন্নয়ন জড়িত। সেজন্য মানসম্পন্ন বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের পৃথক হলে আদালতসমূহে বিশেষ করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতসমূহে এজলাসের অপ্রতুলতা দেখা দেয়। ফলে  বিচারকগণ এজলাস ভাগাভাগি করে বিচারিক কাজ চালাতে থাকেন। কিন্তু তাতে করে বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী জনগণ যেমন ভোগান্তির শিকার হতে থাকেন, তেমনি মামলার জট দিনের পর দিন বাড়তে থাকে। এমনি অবস্থায় ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করলে তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং পৃথকীকরণকে সুদৃঢ়, দীর্ঘস্থায়ী এবং টেকসই করার জন্য বাস্তবমুখী বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন।

পটুয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনটি ১২ তলা ভিত্তির উপর নির্মিত হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এই চার তলা ভবন উদ্বোধনের ফলে বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ অনেকটাই লাঘব হবে। তিনি জানান, এটাকে আট তলা করা হবে এবং আগামী বছরই অবশিষ্ট ৪ তলার নির্মাণ কাজ শুরু হবে। তখন দুর্ভোগ পুরোপুরি কেটে যাবে। তিনি বলেন, এই আদালত ভবন নির্মাণের উদ্দেশ্য তখনই সফল হবে যখন বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলেই স্ব-স্ব দায়িত্ব আন্তরিকভাবে পালন করে দ্রুত ন্যায়বিচার প্রদানে সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন।

পটুয়াখালীর জেলা ও দায়রা জজ রোখসানা পারভীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোঃ শাহজাহান মিয়া, আ স ম ফিরোজ, এস এম শাহজাদা ও মোঃ মহিববুর রহমান, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য কাজী কানিজ সুলতানা, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মোঃ গোলাম সারওয়ার, জেলা প্রশাসক মোঃ মতিউল ইসলাম চৌধুরী, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জামাল হোসেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ মইনুল হাসান প্রমুখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা।