অপচেষ্টার মাধ্যমে চালের বাজার অস্থিতিশীল করা হলে কঠোর অবস্থানে যাবে সরকার—খাদ্যমন্ত্রী

ঢাকা, ১৭ আষাঢ় (১ জুলাই): খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, এবার বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে; এই ভরা মৌসুমে চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ার কোনো কারণ নেই। যদি কেউ অপচেষ্টার মাধ্যমে চালের মূল্য বৃদ্ধি করার চেষ্টা করে তাহলে কঠোর অবস্থানে যাবে সরকার; প্রয়োজনে সরকারিভাবে চাল আমদানি করার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন খাদ্যমন্ত্রী।
আজ ‘বাজারে চালের মূল্য স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে আলোচনা’ শীর্ষক এক সভায় মন্ত্রীর মিন্টো রোডস্থ সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সমন্বয় ও সঞ্চালনা করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ডক্টর মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন দেশের ৮টি বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারগণ, ৮ বিভাগের বিভাগীয় চালকল মালিক সমিতির দু’জন করে প্রতিনিধি, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকগণ, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
সভায় উপস্থিত চালকল মালিকদের উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখেন, সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করেন; যদি তা না করেন তবে সরকার চাল আমদানিতে যেতে বাধ্য হবে। কিন্তু সরকার আমদানিতে যেতে চায় না; গেলে মিলারদের লোতসান হবে এবং যে সমস্ত কৃষক ধান ধরে রেখেছে তারাও লোকসানে পড়বে। এই সময়ে যে সমস্ত মিল এগিয়ে আসবে তাদেরকে এ বি সি এভাবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করার জন্য ইতিমধ্যেই খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেসব মিলকে পরবর্তীতে সেভাবে মূল্যায়ন করা হবে- জানান মন্ত্রী।
মিলারদের উদ্দেশে মন্ত্রী আরো বলেন, এই করোনাকালে সবাই বিপদগ্রস্ত। এবার মানুষকে সেবা করার সুযোগ রয়েছে। সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসুন। কথা স্মারণ করে মন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সালে হাওড়ে বন্যার সময় সরকারিভাবে চালের সংগ্রহ বাধাগ্রস্ত হলে সরকার চাল আমদানির উপর ট্যাক্স ফ্রি করে দিয়েছিল ফলে ৪০ লাখ মেট্রিক টন চাল বিভিন্নভাবে আমদানি করা হয়। সে কারণে সেই বছর মিল মালিকরা এবং কৃষক উভয়েই চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তিনি বলেন, কৃষক বাঁচলে ধান উৎপাদিত হবে এবং আপনারা চালকল মালিকগণ বেঁচে থাকবেন। কৃষক যাতে বিপাকে না পড়ে; বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষক যেন ধানের ন্যায্য মূল্য পায় সেজন্য এবার ৮ লাখ মেট্রিক টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ইতোমধ্যেই কৃষক তার ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে।
মন্ত্রী মিলগেট থেকে কোন ধান কত দামে বিক্রি হচ্ছে তা যাচাই করা এবং মনিটরিং করার জন্য উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনারদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
সঠিক সময়ে চাল দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আপনারা সাপ্তাহিক, পাক্ষিক একটা সিলিং করে নেন; কখন, কি পরিমাণ চাল সরকারি খাদ্য গুদামে সরবরাহ করবেন। সরকার সকল ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দিচ্ছে; অতএব সেই প্রণোদনার অংশীদারিত্বের সুযোগ আপনারাও নিতে পারবেন বলে উপস্থিত মিল মালিকদের অবহিত করেন খাদ্যমন্ত্রী। সরকারিভাবে চালের মূল্য বৃদ্ধি করা কোনোভাবেই হবে না জানান তিনি।