হালকা প্রকৌশল শিল্পের উন্নয়নে পৃথক শিল্পনগরী গড়ে তোলা হচ্ছে – শিল্পমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, হালকা প্রকৌশল শিল্পের উন্নয়নে ‘বিসিক বৈদ্যুতিক পণ্য উৎপাদন ও হালকা প্রকৌশল শিল্পনগরী স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। তিনি বলেন, মুন্সিগঞ্জ জেলার টুঙ্গিবাড়িতে ৫০ একর জমির ওপর পরিবেশবান্ধব এ শিল্পনগরী গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে ৩শ’ ৫টি শিল্প ইউনিট থাকবে, যেখানে প্রায় ১১ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।শিল্পমন্ত্রী আজ রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘হালকা প্রকৌশলখাতে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কারখানার উন্নয়নে অবাধ বাজার তথ্য এবং প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধন’ (Access to Market Information and Technology Upgradation for SMEs in Light Engineering Sector) শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি, বাংলাদেশ (নাসিব) এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোডাক্ট বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিল (এলইপিবিপিসি) যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করে। নাসিবের প্রেসিডেন্ট মির্জা নূরুল গণী শোভনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) পরিচালক ড. সৈয়দ মোঃ ইহ্ধসঢ়;সানুল করিম। ন্যাশনাল স্কিলস্ধসঢ়; ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান মোঃ ফারুক হোসেন, এ-টু-আই (ধ২র) প্রকল্পের পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নাসিব উপদেষ্টা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদসহ হালকা প্রকৌশল শিল্প উদ্যোক্তারা আলোচনায় অংশ নেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা হালকা প্রকৌশল শিল্পকে বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি উদীয়মান খাত হিসেবে উল্লেখ করেন। তারা বলেন, এ খাতকে কেন্দ্র করেই দেশে শিল্পায়নের ভিত্তি গড়ে ওঠেছে।
বর্তমানে সারা দেশে ৪০ হাজারেরও বেশি হালকা প্রকৌশল শিল্প কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় সরাসরি ৬ লাখ এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ৬০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রতিবছর হালকা প্রকৌশল শিল্পখাতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি আমদানি বিকল্প যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ উৎপাদিত হয়। এখাতে প্রশিক্ষিত জনবল তৈরির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। তারা হালকা প্রকৌশল শিল্পের উন্নয়নে বিসিক গৃহীত প্রকল্প দ্রুত সমাপ্ত করার পরামর্শ দেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, সরকারের ইশতেহার অনুযায়ী এসএমইখাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে শিল্প মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় চিহ্নিত ১শ’ ৭৭টি এসএমই ক্লাস্টারের আধুনিকায়ন ও উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। আগামী পাঁচ বছরে শিল্পখাতে ২৫ শতাংশ কর্মসংস্থান সৃষ্টির টার্গেট বাস্তবায়নে শিল্প মন্ত্রণালয় চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের পাশাপাশি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করবে। এসএমইখাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্য বাস্তবায়নে একটি শিল্প বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
হুমায়ূন আরো বলেন, হালকা প্রকৌশল পণ্যের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিশ্ববাজারে রপ্তানির সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। এ লক্ষ্যে শিল্পোন্নত দেশগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে এখাতে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি উৎপাদিত পণ্যে মূল্য সংযোজন এবং পণ্য বৈচিত্র্যকরণের প্রয়াস জোরদার করতে হবে। এখাতে দক্ষ এসএমই উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে ‘লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোডাক্ট ইনকিউবেশন সেন্টার’ গড়ে তুলতে হবে। তিনি বহির্বিশ্বে বাংলাদেশি হালকা প্রকৌশল পণ্যের প্রসারে বাজার সমীক্ষা চালিয়ে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী মানসম্মত নতুন পণ্য উৎপাদনের তাগিদ দেন।