সৈয়দপুরে রেলওয়ের জমিতে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ নোটিশের প্রতিবাদে পৌর পরিষদের সভা

নীলফামারী প্রতিনিধি ॥ সৈয়দপুরে রেলওয়ের পতিত জমিতে বসবাসকারি অসহায় বাস্তুহারাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে সৈয়দপুর বাসী। এনিয়ে সৈয়দপুরে ধারাবাহিকভাবে চলছে প্রতিবাদ সমাবেশ। পৌর পরিষদের ব্যানারে সৈয়দপুর বাস্তুহারা কমিটি পৌর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে সমাবেশ হচ্ছে। ৩১ আগস্ট শনিবার রাতে শহরের ফ্রি-আমিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বাস্তুহারা কমিটির ডাকে রেলওয়ে কর্তৃক উচ্ছেদের প্রতিবাদে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পৌর মেয়র অধ্যক্ষ মোঃ আমজাদ হোসেন সরকার।
সভাপতিত্ব করেন বাস্তুহারা কমিটির সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর তারিক আজিজ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্যানেল মেয়র-১ জিয়াউল হক জিয়া, প্যানেল মেয়র-২ শাহিন আক্তার, পৌর কাউন্সিলর আবিদ হোসেন লাড্ডান, এরশাদ হোসেন পাপ্পু, আল মামুন সরকার, জোবায়দুল ইসলাম মিন্টু, আসগার আলী, জোসনা বেগম ও মিনারা বেগম প্রমুখ। এর আগে গত শুক্রবার রাতে শহরের বাঁশবাড়ি হানিফ মোড় ও বৃহস্পতিবার রাতে হাতিখানা তিনমাথা মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাস্তুহারা কমিটির সভাপতি পৌর কাউন্সিলর মোঃ তারিক আজিজ। প্রতিটি সমাবেশে বক্তব্য বলেন সৈয়দপুর পৌরসভা মেয়র অধ্যক্ষ মোঃ আমজাদ হোসেন সরকার।
এছাড়া সংগঠনটির সহ-সভাপতি সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ এলাকার প্রতিবাদি গন্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ। সমাবেশে পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন সরকারসহ বক্তারা বলেন সৈয়দপুরে রেলওয়ের পতিত জমিতে দেশ স্বাধীনের আগে থেকেই এখানকার অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠি বসবাস করে আসছেন। অথচ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মাঝে মাঝে মাইক প্রচারণার মাধ্যমে মানুষজনের মাঝে আতংক সৃষ্টি করেন। তারা বলেন, তখন থেকেই বাস্তুহারা জনগোষ্ঠি রেলওয়ের পতিত জমিতে গড়ে ওঠা বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের নামে এককালীন অথবা বাৎসরিক বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানিয়ে আসলেও রেল কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
বক্তারা বলেন, রেলের জমিতে গড়ে ওঠা বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের মাঝে বরাদ্দ দিলে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব পেত রেলওয়ে। কিন্তু তা না করে অতি উৎসাহী রেলওয়ে কর্মকর্তারা উচ্ছেদের নামে সৈয়দপুরবাসীকে আতংকিত করছে। এ বিষয়ে সমাবেশে সন্দেহ প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, এটি সরকারের জনপ্রিয়তা ক্ষুন্ন করতে চক্রান্ত করা হচ্ছে কিনা তা তদন্ত করা দরকার। বক্তারা বাস্তুহারাদের উচ্ছেদ না করে যে যেখানে আছে সেখানেই তাদের নামে সহজ শর্তে বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানিয়ে উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানান রেলওয়ের প্র্রতি। তারপরেও যদি বাস্তুহারাদের দাবি মানা না হয়, তাহলে আইনীভাবে এ চক্রান্ত প্রতিহত করা হবে বলে ঘোষণা দেন।
এ জন্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রামে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহব্বান জানানো হয়। প্রতিটি সমাবেশে পৌরসভার সকল কাউন্সিলরসহ আতংকিত সৈয়দপুরবাসি উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য সৈয়দপুরে রেলওয়ের জমিতে বসবাসকারিদের উচ্ছেদ এবং উচ্ছেদ করা মালামাল নিলামে বিক্রয়ের জন্য তারিখ নির্ধারণ করেছে পাকশী রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী গোটা শহরে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে রেলওয়ের পক্ষ থেকে গোটা শহরে মাইকিং করা হয়। এরপরেই শহরব্যাপি মানুষজনের মাঝে উচ্ছেদ আতংক শুরু হয়।