সৈয়দপুরে আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন কাউন্সিলে সংঘর্ষে ৬ জন আহত ॥ কাউন্সিল স্থগিত

নীলফামারী প্রতিনিধি ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে দু’পক্ষ্যের সংঘর্ষে ৪ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। একারণে কাউন্সিল স্থগিত করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ২৮ আগস্ট বুধবার রাতে উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নে। জানা যায়, পূর্ব ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী ঘটনার দিন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কাউন্সিল উপলক্ষ্যে হাজারীহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ প্রাঙ্গনে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভার।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য রাবেয়া আলীম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র আখতার হোসেন বাদল, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এনামুল হক চৌধুরী ও রাবেয়া আলীমের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার রাশেদুজ্জামান। আলোচনা সভা শেষে অনুষ্ঠিত হয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিল।
এতে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোখলেছুর রহমান সরকার ও কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও এনামুল হক চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক পদে নজরুল ইসলাম নজু ও সার্জেন্ট (অবঃ) সামসুল হক। কাউন্সিলে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এফাজ উদ্দিন সরকার, প্রিজাইডিং অফিসার ছিলেন কাজী সাবের প্রামানিক ও কার্তিক চন্দ্র রায়।ইউনিয়নের ২৩৬ জন কাউন্সিলরর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
কিন্তু ভোট গনণার সময় হঠাৎ করে এনামুল হক চৌধুরীর লোকজন প্রতিপক্ষ সভাপতি প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোখলেছুর রহমানের ব্যালট পেপার ছিনতাই করার চেষ্টা করলে হট্টগোল শুরু করে। এতে উভয় পক্ষের লোকজনের মাঝে বাক বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ, র্যাব উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। হাতাহাতির এক পর্যায়ে সভাপতি প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোখলেছুর রহমানকে বেধরক মারপিট করায় তিনি গুরুত্বরভাবে আহত হন।
এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা এফাজ উদ্দিন সরকার বাধা দিতে গেলে তিনিসহ কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ ও প্রিজাইডিং অফিসার কাজী সাবের প্রামানিক, আব্দুল মান্নান পাটোয়ারীও আহত হন। আহতদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোখলেছুর রহমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। এমতাবস্থায় কাউন্সিলের ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন বাদল বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আমাদের উপজেলা আওয়ামী লীগের কে? তিনি আমাদের কাউন্সিল বিষয়ে নাক গলান কেন? তার তো এ ব্যাপারে কোন দায়িত্বই নেই। তার অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণেই মূলতঃ কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়ন কাউন্সিলে হট্টগোল সৃষ্টি হয়েছে।
আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগের ২৯ জন সদস্য এ ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত নেব। সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বলেন, শান্তিপূর্ণ কাউন্সিলের ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। ভোট শেষে গণনার সময় এনামুল চেয়ারম্যানের লোকজন হেরে যাবে এমন আশঙ্কায় ভোট কেন্দ্রে গন্ডগোল সৃষ্টি করে। পরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোখলেছুর রহমান সরকার বাধা দিলে হাতাহাতির সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে তারা মোখলেছুরকে বেধরক মারপিট করে। এতে সে গুরুত্বরভাবে আহত হয়। তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।