সিলেট বিভাগে সৃষ্ট বন্যার প্রভাবে পিডিবি ও আরইবি’র বন্যা মোকাবিলা ও ক্ষয়ক্ষতির সার্বিক অবস্থা
ঢাকা, ৬ আষাঢ় (২০ জুন): সিলেট বিভাগে চলমান বৃষ্টিপাত ও উজান হতে বয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) ও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর সিলেট জোনের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, লাইন, ট্রান্সফরমার ও বৈদ্যুতিক পোলের ক্ষয়ক্ষতির জন্য গ্রাহকদের বিশেষ করে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ দুঃখ প্রকাশ করছে।
বিতরণ অঞ্চল, বিউবো, সিলেটের অধীনে ৩৩/১১ কেভি মোট ২১টি উপকেন্দ্রের মধ্যে সকল উপকেন্দ্রই বর্তমানে চালু রয়েছে, যার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রয়েছে। বিতরণ অঞ্চল, বিউবো, সিলেট বিভিন্ন শ্রেণির মোট গ্রাহক সংখ্যা ৫ লাখ ৬১ হাজার ৬৯ জন, সর্বোচ্চ বিদ্যুতের চাহিদা ২২৫ মেঃওঃ। বিতরণ অঞ্চল, বিউবো, সিলেট এলাকায় ৯টি ১৩২/৩৩ কেডি গ্রিড উপকেন্দ্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ নেয়া হয়। সিলেট বিভাগে চলমান বৃষ্টিপাত ও উজান হতে বয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার প্রভাবে ৩৩/১১ কেভি ২১টি উপকেন্দ্রের মধ্যে ৭টি উপকেন্দ্রের অভ্যান্ত ইয়ার্ডে পানি প্রবেশ করলেও নিরাপদ দূরত্বে থাকায় উপকেন্দ্রসমূহ চালু অবস্থায় রয়েছে।
৩৩ কেভি লাইন ২ কি.মি.; ১১ কেভি লাইন ২২০ কি.মি.; ০.৪ কেভি লাইন ৬০০ কি.মি.; ১১/০.৪ কেভি ২৫০ কেভিএ ট্রান্সফরমার ৯টি; ১১/০.৪ কেভি ২০০ কেভিএ ট্রান্সফরমার ৫টি; ১১/০.৪ কেভি ১০০ কেভিএ ট্রান্সফরমার ৩টি; ১৫ মিটার পোল (হেলে পড়া) ২০টি; ১২ মিটার পোল (হেলে পড়া) ১৩০টি ; ৯ মিটার পোল (হেলে পড়া) ২৪৫টি; ৩৩ কেভি পিন ইন্দুলেটর (পিন-সহ) ৯৩টি; ১১ কেভি পিন ইন্সুলেটর (পিন-সহ) ২৪০টি; ৩৩ কেভি ডিওএফসি ৪টি; ১১ কেভি ডিওএফসি ৬০টি; ৩৩ কেভি এল এ ৪টি; ১১ কেভি এল এ ৬০টি; ৩৩ কেভি ডিস্ক ইন্সুলেটর (ফিটিংস-সহ) ৪ সেট; ১১ কেভি ডিস্ক ইন্সুলেটর (ফিটিংস-সহ) ২২ সেট; গাই এসেম্বলি ১৭০ সেট;। প্রাথমিক ভাবে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ = ৯৪.৪০ লাখ টাকা; বিতরণ জোনের আওতাধীন সকল এলাকাই কম-বেশি বন্যা কবলিত হওয়ায় বন্যার পানি কমার পর প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য নিরূপণ করা সম্ভব হবে।
বিতরণ জোনের আওতাধীন সকল এলাকাই কম-বেশি বন্যা কবলিত হওয়ায় বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা রোধে নিরাপত্তার স্বার্থে অনেক জায়গায় ট্রান্সফরমারের ফিউজ কেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এছাড়াও, অনেক বসতবাড়ি পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় অত্যধিক বৃদ্ধি পেয়ে মিটার পর্যন্ত চলে আসায় বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা রোধে নিরাপত্তার স্বার্থে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এসকল কারণে বিতরণ জোনের প্রায় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন। বন্যার পানি কমলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। বিতরণ অঞ্চল, বাবিউবো, সিলেট অঞ্চলের সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
আরইবি’র বিতরণ ব্যবস্থার সিলেট অঞ্চলে সমিতির সংখ্যা-ছয়টি (সিলেট-১, সিলেট-২, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও কিশোরগঞ্জ)। বিনষ্ট পোল ৫৫টি, রিকভারি-৩৭টি; ট্রান্সফরমার-৬০টি রিকভারি-৪২টি; স্প্যান (তার ছেঁড়া)-৭৫টি, রিকভারি-৬৬টি; ইন্সুলেটর-২০টি, রিকভারি-২০টি; মিটার-২৫টি, রিকভারি-২৫টি; বিদ্যুৎবিহীন গ্রাহক সংখ্যা-১২১৪৩টি। মোট আর্থিক ক্ষতি পরিমাণ ৭৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা।
কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ যার যার অবস্থান হতে মনিটরিং ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল রাখার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে। বিতরণ জোনের আওতাধীন সকল এলাকাই কম-বেশি বন্যাকবলিত হওয়ায় বন্যার পানি কমার পর প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য নিরূপণ করা সম্ভব হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সার্বিকভাবে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং সদাসতর্ক রয়েছে। কোথাও ছেঁড়া বৈদ্যুতিক তার দেখলে নিকটস্থ বিদ্যুৎ অফিসে অবহিত করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।