সিউলস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে গণহত্যা দিবস পালন
সিউল (দক্ষিণ কোরিয়া), ২৫ মার্চ : দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে দূতাবাস প্রাঙ্গণে গণহত্যা দিবস পালন করেছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা সম্পর্কে কোরিয়ানদের বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কোরিয়ানদের সচেতন করার জন্য দূতাবাস এ অনুষ্ঠানে কোরিয়ার শিঙ্গু কলেজের শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানায়। শিক্ষার্থী ছাড়াও এ অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন ।
বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। জাতীয় সঙ্গীতের পর পবিত্র কোরআন, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক থেকে পাঠ এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এছাড়া শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ¦লন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর দূতাবাসের কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বাণী পড়ে শোনান। গণহত্যা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে একাত্তরের গণহত্যার ওপর ‘Genocide ১৯৭১’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং গণহত্যার ওপর Bangladesh Genocide Revisited শীর্ষক পুস্তিকা অতিথিদের মাঝে বিতরণ করা হয় । আলোচনা পর্বে বক্তারা ১৯৭১ সালের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ওপর আলোকপাত করেন। রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম তার বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
তিনি বলেন, একাত্তরের গণহত্যার বিষয়টি দক্ষিণ এশিয়া, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডল অথবা জাতিসংঘের কোনো দাপ্তরিক বা ঐতিহাসিক দলিলে উল্লেখ নেই। তাই এই গণহত্যাটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতিপূর্বক নথিভুক্ত করা সম্ভব হলে ভবিষ্যতে কেউ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করার সুযোগ পাবে না। এছাড়া শিঙ্গু কলেজের শিক্ষার্থী জাং জে-হী তার বাংলা বক্তৃতায় বাংলাদেশ ও কোরিয়ার ঐতিহাসিক সংগ্রামের সাদৃশ্য তুলে ধরেন এবং মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান । আলোচনা পর্ব শেষে মুক্তিযুদ্ধের কবিতা আবৃত্তি পরিবেশন করা হয়। পরিশেষে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।