সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে—-আইনমন্ত্রী
ঢাকা, ১৪ ভাদ্র (২৯ আগস্ট) : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আগামী ৩ সেপ্টেম্বর সংসদ অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনের বিল যাতে এই অধিবেশনে উঠতে পারে, সে জন্যই গতকাল মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সময় যেহেতু খুবই কম, তাই আগামী জাতীয় সংসদ অধিবেশনে উত্থাপনের পর সংসদীয় কমিটিতে অংশীজনদের সঙ্গে প্রস্তাবিত এ আইন নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা হবে।
আজ ঢাকায় সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, ‘আপনাদের (সাংবাদিক) আমি বলেছিলাম, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করব। সাইবার নিরাপত্তা আইন হওয়া সত্ত্বেও এটি কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে করা হয়েছে। আমরা বলি নাই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে একদম বাদ দিয়ে সাইবার নিরাপত্তা আইন করছি। কিন্তু আদতে (কাগজপত্রে) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে রহিত করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করছি।’
আইনমন্ত্রী বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে (ওয়েবসাইটে খসড়া দেওয়ার পর) যেসব মতামত দেওয়া হয়েছে, সেগুলো একসঙ্গে করে সবকিছু সংসদীয় কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হবে। যারা বক্তব্য জানাতে চাচ্ছেন, তাদের সংসদীয় কমিটিতে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অনিষ্পন্ন বা চলমান মামলাগুলোর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে পরিষ্কারভাবে লেখা আছে, অপরাধ করার সময় যে আইন বলবৎ ছিল, সেই আইনেই বিচারকার্য হবে এবং সেই আইনে যে সাজা ছিল, সেই সাজাই দিতে হবে। সেখানে একটি কথা আছে (৩৫ অনুচ্ছেদে), সেটি হচ্ছে যদি নতুন আইনে সাজা বেশি হয়, তাহলে সেই সাজা দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ যে আইনে অপরাধ করেছে অথবা অপরাধ করার সময়ে যে আইন বলবৎ ছিল, সেই আইনে যে সাজা, সেটা দিতে হবে। দ্বিতীয়ত আছে, কোনো ভিন্নতর সাজা দেওয়া যাবে না। তবে এবিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
প্রস্তাবিত আইন নিয়ে অনেকেই বলছেন ‘নতুন বোতলে পুরোনো মদ’ এবং ‘যে লাউ সেই কদু। এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ ধারায় সাজা ছিল ১০ বছর। সেই সাজা কমিয়ে করা হয়েছে ৫ বছর। আর ২১ ধারার উপধারা-২–এ বলা ছিল, এটি যদি পুনর্বার করা হয়, তাহলে সাজা দ্বিগুণ হবে। সেটা বাদ দেওয়া হয়েছে। মানহানির জন্য সাজা ছিল তিন বছর। সেটায় কারাদণ্ড বাদ দিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। এগুলো কি পরিবর্তন নয়? এ ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অনেক ধারা অজামিনযোগ্য ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনে শুধু কারিগরি ধারার অপরাধকে অজামিনযোগ্য করে বাকি সব কটি জামিনযোগ্য করা হয়েছে। এগুলো কি পরিবর্তন নয়?