প্রধান মেনু

সকল বাণিজ্য বাধা দূর করতে একমত ভারত-বাংলাদেশ — বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, সকল বাণিজ্য বাধা দূর করতে ভারত- বাংলাদেশ একমত।

আজ ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ভারতের বাণিজ্য, শিল্প ও বেসামরিক বিমান চলাচলমন্ত্রী শ্রী সুরেশ প্রভুর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের সাথে বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পন্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধাসমূহ তুলে ধরা হয়েছে। পাটজাত পণ্য, খাদ্যপণ্য, ভোজ্য তেলসহ বাংলাদেশের বেশকিছু পণ্য ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে। অগ্রাধিকারভিত্তিতে সমস্যাগুলো সমাধান করার বিষয়ে উভয়দেশ একমত হয়েছে। বর্ডার হাটের বিষয়ে উভয়দেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। বর্তমানে ৪টি বর্ডার হাট চালু রয়েছে, আরো ৬টি বর্ডার হাট চালুর বিষয় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশের শেরপুর জেলার নাকুগাঁও এবং ভারতের ডালু সীমান্তে একটি বর্ডারহাট অল্প কিছুদিনের মধ্যে চালু করা হবে।

বাংলাদেশ ২১টি পণ্য ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে বিএসটিআইয়ের টেস্টিং রিপোর্ট গ্রহণ করার অনুরোধ করা হয়েছিল। ইতোমধ্যে ১৫টি পণ্যের রিপোর্ট গ্রহণ করা হয়েছে, অবশিষ্ট ৬টি পণ্যের রিপোর্ট গ্রহণ করতে ভারত সম্মত হয়েছে। এছাড়া আরো ৬টি পণ্যের রিপোর্ট গ্রহণ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত বিভিন্নভাবে বাংলাদেশকে সহায়তা করেছে। ভারত সরকার মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি লোকসভায় রেকটিফাই করে তা বাস্তবায়ন করেছে। ছিটমহলবাসী এখন স্বাধীন জীবনযাপান করছে। উভয়দেশের বাণিজ্য এখন ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। বাংলাদেশ রপ্তানি করছে ৮৭৩ দশমিক ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করছে ৮ হাজার ৬১৯ দশমিক ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বাংলাদেশ অনেক রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি ভারত থেকে আমদানি করে অনেক দেশে পণ্য রপ্তানি করে থাকে। সেখানে বাণিজ্য বাংলাদেশের পক্ষে। এখন ভারতের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পণ্যের রপ্তানি বাড়ছে।

এসময় ভারতের বাণিজ্য, শিল্প ও বেসামরিক বিমান চলাচলমন্ত্রী ও ভারতের প্রতিনিধিদলের প্রধান শ্রী সুরেশ প্রভু সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বাংলাদেশ দ্রুত উন্নতি লাভ করছে। উভয়দেশের বাণিজ্যক্ষেত্রে কিছু জটিলতা আছে। উভয়দেশের সরকার এবং ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ আলোচনা করে সকল সমস্যার সমাধান করা হবে। বৈঠকে সমস্যাগুলো সমাধানের বিষয়ে একমত হয়েছি। বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য করতে ভারত খুবই আন্তরিক। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিএসটিআইয়ের টেস্টিং রিপোর্ট গ্রহণ, ভোজ্যতেল রপ্তানির ক্ষেত্রে জটিলতা, নতুন বর্ডারহাট চালু, পাটপণ্য রপ্তানিসহ যে সকল সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে, সেগুলো অগ্রাধিকারভিত্তিতে সমাধান করা হবে।

ট্যুরিজমকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক শিক্ষিত যুবককে কাজে লাগানোর সুযোগ এসেছে। এ মুহুর্তে বাংলাদেশের জন্য সার্ভিস সেক্টর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বৈঠকে উভয় দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, বিষয়গুলোতে একমত হয়েছি। উভয়দেশের স্বার্থ রক্ষা করে বাণিজ্য বৃদ্ধি করা হবে।’

বাংলাদেশের ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে অতিরিক্ত সচিব মুন্সী শফিউল হক, ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মোঃ শফিকুল ইসলাম, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য্য, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্তী। ভারতের ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা, ভারতের বাণিজ্য বিভাগের (এফটি-এসএ) যুগ্মসচিব ভুপিনদার বাল্লা, বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব শেফালী জুনিগা।