শেষ পর্যন্ত অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী বাল্য বিবাহের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেল
গোলাপগঞ্জে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রী বাল্য বিবাহের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে। ৫৭ বছরের লন্ডনী পাত্র পেয়ে লোভে পড়ে পিতা নিজ কন্যাকে বিয়ে দেয়ার আয়োজন করলে মাত্র দু’ঘন্টা পূর্বে পুলিশ গিয়ে হাজির হয় কনের বাড়িতে। মেয়েকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় বিয়ে দিবেন না এমন মুচলেকা দিয়ে পিতা ও আত্মীয়-স্বজনরা রক্ষা পান।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর গোয়াসপুর (পাত্তিউরা) গ্রামের সোনা মিয়া তার ১৪ বছরের নিজ কন্যা ঝুমা বেগমকে জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল গ্রামের ৩ সন্তানের জনক ৫৭ বছর বয়সের লন্ডনী এক পাত্রের কাছে বিয়ে দেয়ার জন্য সকল আয়োজন সম্পন্ন করলে বিষয়টি সাংবাদিক মহলকে ঝুমার এক আত্মীয় জানান। গতকাল শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর বর পক্ষ একটি মাইক্রো যোগে এসে ঝুমাকে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলে বিষয়টি সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আলতাফ হোসেনকে অবহিত করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে তাৎক্ষণিক গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম ফজলুল হক শিবলী এএসআই সুমন চন্দ্র গোপ’সহ একদল পুলিশ সোনা মিয়ার বাড়ীতে প্রেরণ করেন। এ সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য জালাল আহমদের সহায়তায় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে পুলিশের কাছে কনের পিতা সোনা মিয়া লিখিত ভাবে অঙ্গিকার করেন তার কন্যা ঝুমা বেগম বিবাহ উপযুক্ত না হওয়ার আগ পর্যন্ত বিয়ে দিবেন না। জানা যায়, ঝুমা স্থানীয় একটি কলেজিয়েট হাই স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ালেখা করত। প্রশাসনের সহযোগীতায় বাল্য বিবাহর কবল থেকে ঝুমা রক্ষা পাওয়ায় এলাকাবাসী ধন্যবাদ জানিয়েছেন। একটি সূত্রে জানা যায়, ৫৭ বছর বয়সী পাত্র লন্ডনে স্থায়ী ভাবে বসবাস করলেও তার একাধিক স্ত্রী রয়েছে। বিয়ের পর ঝুমাকে লন্ডনে নিয়ে যাবে এমন লোভ দেখিয়ে পিতাকে রাজি করে বিয়ে করতে চেয়েছিল লম্পট পাত্র। তবে কনে পক্ষ পাত্রের সঠিক নাম-ঠিকানা পুলিশের কাছে দিতে পারেনি।
(আজিজ খান, গোলাপগঞ্জ, সিলেট)