প্রধান মেনু

শিক্ষা হবে দক্ষতামুখী কারিগরিই হবে শিক্ষার অগ্রাধিকার –শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষা হবে দক্ষতামুখী। দক্ষতাবিহীন সনদভিত্তিক শিক্ষা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও জাতির জন্য বোঝা তৈরি করে। যুগোপযোগী কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা-প্রশিক্ষণই জাতির অর্থনৈতিক মুক্তির পথ। কারিগরিই হবে শিক্ষার অগ্রাধিকার। সরকার পর্যায়ক্রমে শিক্ষাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেবে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আজ আইডিইবি মিলনায়তনে স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (স্টেপ)” আয়োজিত ‘জাতীয় স্কিলস্ কম্পিটিশন- ২০১৬’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা সচিব মোঃ আলমগীর, স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট-এর প্রকল্প পরিচালক এ বি এম আজাদ, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বক্তৃতা করেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষা বাংলাদেশের অগ্রাধিকার খাত, কারিগরি শিক্ষা হলো অগ্রাধিকারের অগ্রাধিকার। সরকার ইতোমধ্যে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থী ভর্তির হার শতকরা ১ ভাগ থেকে ১৪ ভাগের উপরে উন্নীত করেছে। এ হার আগামী ২০২০ সালের মধ্যে শতকরা ২০ ভাগ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে শতকরা ৩০ ভাগে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে জোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে এ হারকে শতকরা ৬৫ ভাগের ঊর্ধ্বে তুলতে হবে। এখাতের অগ্রগতি তরান্বিত করার লক্ষ্যে সরকার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ করেছে। কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা, কোর্স-কারিকুলাম যুগোপযোগী করা, যন্ত্রপাতি-ল্যাব-ওয়ার্কশপ বাড়ানো, নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করাসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট সুবিধার মধ্যে আছে। একশ’ বছরের অধিক সময় পর কোনো দেশ এ সুবিধা পায়। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ১০ কোটি ৫৬ লাখ। শতকরা হারে তা ৬৬ ভাগ। ২০৩০ সালে এই হার শতকরা ৭০ ভাগে উন্নীত হবে। এ এক বিশাল সুযোগ। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। নতুন প্রজন্মকে আধুনিক কারিগরি প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তুলতে হবে। তা না হলে এরাই হয়ে উঠবে দেশের জন্য বড় বোঝা। তিনি কারিগরি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দেন। তিনি সাধারণ স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাসমূহেও কারিগরি শাখা খোলার পরামর্শ প্রদান করেন। তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যমআয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য অর্জনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
উল্লেখ্য, দেশে তৃতীয়বারের মতো স্কিলস্ কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতবছর অক্টোবর মাসে দেশের ১৬২টি সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে উঠে এসেছিল নতুন ৮০০ প্রকল্প। ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয় আঞ্চলিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতা। সেখান থেকে জাতীয় পর্যায়ে এসেছে ৫১টি প্রদর্শনী প্রকল্প। আজ নির্বাচিত হবে টপ তিন প্রকল্প। এই সর্বোত্তম তিন প্রকল্প জাতীয় প্রযুক্তিতে অবদান রাখবে।
‘জাতীয় স্কিলস কম্পিটিশন ২০১৬’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে আজ জাতীয় যাদুঘর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি কাকরাইলস্থ আইডিইবি-তে গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালিতে ঢাকাস্থ কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
মন্ত্রী পরে আইডিইবি’র ৫ম তলায় স্কিলস কম্পিটিশনের স্টলগুলো পরিদর্শন করেন।