প্রধান মেনু

রায়পুরে স্ত্রী-সন্তানদের নির্যাতনে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বৃদ্ধ!

মো: আবদুল কাদের,রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বেপারী বাড়ির বৃদ্ধ মনির আহাম্মদ (৭০)। স্ত্রী ও সন্তানদের নির্যাতনের ভয়ে গত ৫ বছর ধরে বন্ধুর বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ।

গত ৪০ বছর নিজে খেয়ে না খেয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের বরণপোষণ দিয়েছেন। প্রায় সময় পরিবারের লোকজন অপরাধ করলেও সে অপরাধ নিজের কাঁধে নিয়ে এলাকাবাসীর সমালোচনা শুনতে হয়েছে। প্রায় সময় মিথ্যা অভিযোগ তোলে স্ত্রী ও সন্তাননদের হাতে বেদম মার খেতে হয়েছে। তারপরও সব অপরাধ সহ্য করেছেন।

এ ঘটনায় রোববার সন্ধ্যায় বন্ধুর সহযোগিতায় নিজের বাড়িতে বসবাস ও সম্পদ ফিরে পেতে ওই বৃদ্ধ স্ত্রী, চার ছেলে, দুই মেয়ে ও এক পুত্রবধূর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। রোববার সন্ধ্যায় অসহায় বৃদ্ধ এই প্রতিবেদকে বলেন, আমার এক স্ত্রী, চার ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আমি অসুস্থ। গত ৫ বছর ধরে আমার স্ত্রী ও সন্তানরা অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে। তাদের এসব কাজে প্রতিবাদ করলে আমাকে বেদম মারধর ও খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়। সম্পত্তি ভাগ করে না দিলেও আমার সব সম্পত্তি তারা ভোগ করছে।

তিনি বলেন, এসব ঘটনার বিচার চেয়ে স্বজন, স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিলে ও সালিশ বৈঠক হলেও স্ত্রী ও সন্তানরা কারও কথাই শুনত না। এলাকাবাসী ও স্বজনদের কাছে বিচার দাবি করায় তাদের অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যাওয়ায় বসতবাড়ি ছেড়ে রাতে মাঝে মাঝে গরুর গোয়াল ঘরে গরুর সঙ্গে এবং চরমোহনা ইউনিয়নের তুলাতুলি নামক স্থানে বন্ধুর বাড়িতে জীবনযাপন করছি। বৃদ্ধ মনির যান, গত ২৫ জানুয়ারি বাগানের নারিকেল ও সুপারি গাছ কেটে ছেলেরা বসতবাড়ি এবং তাদের সঙ্গে থাকতে মেয়েরাও বসতঘর নির্মাণ করার খবর পেয়ে তিনি বাড়িতে যান।

এ সময় স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েরা লাঠি নিয়ে তাকে মারতে আসলে গ্রাম থেকে তিনি পালিয়ে সেই বন্ধুর বাড়িতে চলে যান। রোববার সন্ধ্যায় স্থানীয় এক শুভাকাঙ্খীর সহযোগিতায় বসতবাড়িতে বসবাস করতে ও সম্পদ ভোগ করতে পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে অসহায় বৃদ্ধ মনির আহাম্মেদ বাদী হয়ে স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, ছেলে নূরনবী, দুলাল, খোরশেদ, মো. সুমন, মেয়ে কালী বেগম, সোহাগী বেগম ও খুরশিদা বেগমের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমসহ সন্তানরা বলেন, তিনি (মনির আহাম্মদ) বৃদ্ধ হলেও আচরণ ভালো নয়। বিভিন্ন তুচ্ছ ঘটনায় শারীরিক নির্যাতন করায় বাড়ি থেকে বের করে দিতে বাধ্য হয়েছি। উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন আহাম্মদ মাস্টার বলেন, ওই পরিবারের সদস্যদের বিবাদ মীমাংসার জন্য তাদের স্বজন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একাধিক বৈঠক করা হয়েছিল। স্ত্রী ও সন্তানদের কারণে মীমাংসা করতে না পারায় বৃদ্ধ মনির আহাম্মদকে আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

রায়পুর থানার ওসি একেএম আজিজুর রহমান মিয়া জানান, স্ত্রী ও সন্তানদের বিরুদ্ধে বৃদ্ধের অভিযোগটি গ্রহণ করে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।