রাজধানীর শেরেবাংলা নগর ও মহাখালী থেকে বিকাশ প্রতারনা চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২
হাসিব ::
সাধারণ মানুষ ঠকানোর কাজ খুব সহজ হলেও আইন শৃংখোলা বাহিনীর কার্যকরি ততপরতায় প্রতারক চক্র হিমসিম খেয়ে যাচ্ছে। যার জন্য প্রতারক চক্র তাদের প্রতারনার কৌশল বদলাচ্ছে। কিছু সংঘবদ্ধ চক্র বিকাশ, রকেট, এমক্যাশ ইত্যাদি জালিয়াতি করে সাধারণ মানুষদের প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে যাচ্ছে। তেমনি রাজধানীর শেরেবাংলা নগর ও মহাখালী থেকে বিকাশ প্রতারনা চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২। র্যাব-২ এর এই অভিযান চলে ২৫ডিসেম্বর ২০১৭ সন্ধা-৬টার দিকে। র্যাব-২ এর আভিযানিক দল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর ও মহাখালী থেকে বিকাশ প্রতারনা চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২।
আটককৃত আসামীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। প্রথমে তারা তাদের নিজেদের নাম্বারে বিকাশ করার জন্য দোকানে গিয়ে কৌশলে সিক্রেট ভিডিও রেকোডারের মাধমে বিকাশ দোকানের রেজিষ্টার খাতার ছবি তুলে নিয়ে সেই ছবি তাদের গ্রুপলীডারের কাছে পাঠিয়ে দেয়, গ্রুপলীডার রেজিস্টারে থাকা গ্রাহকদের মধ্যে কয়েকজনকে টার্গেট করে।
তারপর ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্যবহার করে লেনদেনকৃত টাকার চেয়ে বেশি টাকার এসএমএস তৈরী করে এসএমএসটি টার্গেট কৃত ব্যক্তির মোবাইলে পাঠায়। যে মেসেজ এর প্রেরক হিসাবে বিকাশ লেখা দেখা যায়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে যে স্থান হতে বিকাশ করা হয়েছে, প্রতারক চক্র তাকে সেই স্থান উল্লেখ করে জানায় যে আপনার মোবাইলে টাকাটি ভুলবশত দুইবার পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগী বিকাশের অরিজিনাল মেসেজ হিসাবে বিশ্বাষ করে প্রতারকদের আহ্বানে সাড়া দেয়।
প্রতারকচক্রটি ভুক্তভোগীকে জানায় তার আত্মীয় গুরুতর আহত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাই জরুরী টাকার দরকার ইত্যাদি দ্রুত টাকা পাঠানোর জন্য অনুরোধ করে। ভুক্তভোগী প্রতারকচক্রের নিকট টাকা পাঠিয়ে দেয়ার পর বুঝতে পারে বিষয়টি ভুয়া, এবং সে প্রতারীত হয়েছে। তারপর প্রতারকচক্রের সাথে যোগাযোগ করলে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেলে ভুক্তভোগী টাকা ফেরত পাবার আশা ছেড়ে দেয়। এভাবে চক্রটি প্রতারণার মাধ্যমে নিরীহ মানুষের কাছ থেকে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
চক্রটি এভাবে প্রতিমাসে গড়ে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণা করে নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও এ চক্রের মুলহোতারা ফরিদপুর, গাইবান্ধা ও কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে গ্রামের নিরীহ মানুষের নিকট থেকে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়। আসামীদের আরো জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা ফেসুবক ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে পুরাতন মালামাল বিক্রির জন্য আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাকে আকর্ষণ করার পর পণ্যের ২০% টাকা অগ্রিম বিকাশের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য বলে।
টাকা পাওয়ার পর তারা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পণ্য ক্রেতার ঠিকানায় পৌছে দেবে এবং তখন অবশিষ্ট টাকা পণ্য হাতে পাবার পর পরিশোধ করতে হবে। এভাবে ক্রেতা রাজি হয়ে অগ্রিম অর্থ পাঠানোর পর তারা সিমটি পরিবর্তন করে ফেলে। মোবাইল সিম সংগ্রহের ক্ষেত্রে দরিদ্র, নেশাকারী ব্যক্তিদের নিকট হতে ১শ টাকার সিম ৫শ টাকা বা তারও অধিক টাকায় কিনে চক্রটি এই ধরনের অপরাধ করে আসছে, যাতে এই চক্রটির সঠিক ঠিকানা চিহ্নিত করা না যায়। যাদের গ্রেফতার করেছে ঃ
মোঃ নাসির হোসেন (২২), পিতা- মুনসুর আলী, সাং- মদনগঞ্জ, থানা- বন্দর, জেলা-
নারায়নগঞ্জ।
মোঃ রাসেল (২২), পিতা- মোঃ ফোরকান গাজী, সাং- দক্ষিণ চরমাইনকা, থানা- চরফ্যাশন,
জেলা- ভোলা।
মোঃ হানিফ (২০), পিতা- মোঃ আবদুর রাজ্জাক, সাং- কানহর কোমলবাড়ি, থানা- ত্রিশাল, জেলা-
ময়মনসিংহ।
মোঃ শাহাব উদ্দিন (২০), পিতা- মোঃ ইব্রাহিম, সাং- পর্দাবাদ, থানা- বাঞ্চারামপুর, জেলা-
বি-বাড়ীয়া।