মিয়ানমারের উপর চাপ বাড়াতে জাতিসংঘের প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রীর আহ্বান
রাখাইনে গণহত্যা বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য মিয়ানমারের উপর চাপ বাড়াতে জাতিসংঘের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল প্রমিলা পাটেন (চৎধসরষষধ চধঃঃবহ) আজ সচিবালয়ে মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করতে আসলে তিনি এ আহ্বান জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের গণনির্যাতন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদেরকে মানবতার দৃষ্টিকোণ থেকে আশ্রয় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর নির্দেশে খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে সরকার তাদের খাদ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে। বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি সংস্থাও সরকারকে সহায়তা দিচ্ছে। ইতোমধ্যে কক্সবাজারের উখিয়া ও বান্দরবানে ৭৪টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।
শতাধিক চিকিৎসক ও প্রায় সাতশত স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রেষণে প্রেরণ করা হয়েছে। ২৩১টি টিকাদানকারী দল ইতোমধ্যে সাত লাখ রোহিঙ্গার মাঝে কলেরা, এমআর এবং খাবার পোলিও টিকাসহ বিভিন্ন টিকা বিতরণ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের মতো সীমিত সম্পদের দেশে বহিরাগত প্রায় সাত লাখ মানুষকে দীর্ঘদিন এই সাহায্য চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না। তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাদের নিজেদের নাগরিককে যেভাবে হত্যা করছে, বাড়িঘরে আগুন দিচ্ছে, নারীদের ধর্ষণ করছে তা নিন্দনীয়। সারা বিশ^ এর নিন্দা জানাচ্ছে। জাতিসংঘসহ বেশ কয়েকটি দেশ এই নির্যাতন বন্ধ করে তাদের নাগরিককে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্যে ইতোমধ্যে মিয়ানমারকে অনুরোধ জানাচ্ছে।
বাংলাদেশ চায় শীঘ্রই যেন মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে। এ লক্ষ্যে সে দেশের সরকারের উপর চাপ বাড়াতে জাতিসংঘকে ভূমিকা রাখার জন্য পুনরায় আহ্বান জানান মোহাম্মদ নাসিম। পালিয়ে আসা অসহায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসা দিয়ে এগিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটরি জেনারেল। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রের এলাকায় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করায় সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি আহত ও ধর্ষিতাদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে ধর্ষণের শিকার নারীরা যেন পরবর্তীতে প্রতিকার পায় সে লক্ষ্যে তাদের সঠিক তালিকা তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে।
এসময় মন্ত্রী বলেন, উপমহাদেশের নারীরা সামাজিক ও মানসিক বাধার কারণে ধর্ষণের কথা প্রকাশ্যে বলতে চায় না বলে তাদের সঠিক তালিকা তৈরির কাজটি বেশ দুরূহ। তারপরও সরকার বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় এক্ষেত্রে উদ্যোগ নিবে বলে তিনি আশ^াস প্রদান করেন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ সচিব ফয়েজ আহম্মেদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক কো-অর্ডিনেটর মিয়া সেপ্পোসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।