মালদ্বীপের মডেল রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় বান্ধবীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
রাজশাহী ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজ ছাত্রী মালদ্বীপের মডেল কন্যা রাউধা আতিফের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন তার বাবা ডা: মোহাম্মদ আতিফ।সোমবার দুপুরে রাজশাহীর মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে তিনি মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আসামী করা হয়েছে রাউধার সহপাঠি সিরাত পারভীন মাহামুদকে বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদ আতিফের আইনজীবী কামরুল মনির।মামলার আসামী সিরাত পারভীন রাজশাহী ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তার বাড়ি কাশ্মির। সে রাউধার সহপাঠি ও বান্ধবী ছিল। রাউধার সঙ্গে বিদেশী কোটায় সিরাত পারভীন এই মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়।
আইনজীবী কামরুল মনির বলেন, আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য শাহ মখদুম থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।এছাড়াও কাউকে জানানোর আগে সিরাত পারভীন একাই রাউধার রুমে গিয়ে লাশ নিজেই নামিয়েছে বলে সে সবাইকে জানায়। কিন্তু দরজা ভেঙ্গে রাউধার রুমে প্রবেশের কথা বললেও দরজা বা তার ছিটকানি ভাঙ্গার কোন চিহ্ন নেয়। এছাড়াও সেখানে কোন টেবিল ছিল না। যে চেয়ারের উপর দাড়িয়ে রাউধা সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলেছে সে চেয়ারে উঠে ফ্যান হাতে পাওয়া যাবে না। এ ছাড়াও রাউধার মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত সিসিটিভি ক্যামেরা সচল থাকলেও ওই রাতে তা অকেজো ছিল। বিষয়টি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ রাউধার পরিবারকে জানায়। এসব থেকে রাউধাকে হত্যা করা হয়েছে বলে তার পরিবারের সদস্যরা সন্দেহ বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।আদালত চত্বরে রাউধার চিকিৎসক বাবা ডা: মোহাম্মদ আতিফ সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ফরেন্সিক বিভাগেরও পড়া শোনা করেছেন। সে অভিজ্ঞতা থেকে তার মনে হয়েছে রাউধার গলায় যে দাগ রয়েছে তা ওড়না পেচানোর নয়, সেটি দড়ির দাগ। তার গলায় দড়ি পেচিয়ে বাহিরে হত্যা করে লাশ তার বেডে রাখা হয়েছে। এর পর হত্যাকারি আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে। আমি এর সঠিক তদন্ত ও বিচার চাই বলেন তিনি।গত ২৯ মার্চ রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেলে নিজের কক্ষে রাউধা আতিফের লাশ পাওয়া যায়। এরপর ৩১ মার্চ তার পরিবারের সম্মতিতে ময়নাতদন্ত শেষে নগরীর হেতেখাঁ কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।এমবিবিএস ১৩তম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন রাউধা। বিদেশি কোটায় ভর্তির পর গত বছরের ১৪ জানুয়ারি মহিলা হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার ওই কক্ষে উঠেছিলেন তিনি।২০১৬ সালের অক্টোবরে বিখ্যাত ‘ভোগ’ সাময়িকীর নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সংখ্যায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মডেলদের নিয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ‘বৈচিত্র্যের সৌন্দযর্ উদযাপন’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছিলেন মালদ্বীপের ‘নীল নয়না’ এই মডেল কন্যা রাউধা। উঠতি মডেল হিসেবে রাউধার ছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতি।রাউধার মৃত্যুর কারণ খুজতে রাজশাহী আসেন মালদ্বীপের দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রিয়াজ ও পরিদর্শক আহমদ আলী। তারা রাউধার পরিবার, সহপাঠি ও কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। লাশ উদ্ধারের পরের দিন থেকে রাউধার পরিবারের সদস্যরা রাজশাহীতে অবস্থান করছেন। প্রথম থেকে রাউধাকে হত্যা করা হয়েছে বলে সন্দেহ কররে আসছে তার বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যরা।
মোঃশামসুল ইসলাম(রাজশাহী)