ভুটানের সাথে জনযোগাযোগ বৃদ্ধিতে জোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
ঢাকা,১১ চৈত্র (২৫ মার্চ): বাংলাদেশ সফররত ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের সাথে বৈঠকে জনযোগাযোগ বৃদ্ধিতে নানা উদ্যোগের ওপর জোর দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ।
আজ রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ভুটানের রাজা ওয়াংচুকের সাথে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠক সম্পর্কে তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের আগেই ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতিদানকারী দেশ ভুটানের রাজার সাথে অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে ভুটানকে আবার বিবিআইএন (বাংলাদেশ-ভুটান-ইন্ডিয়া-নেপাল ইনিশিয়েটিভ)-এ যোগদানের জন্য এবং এয়ার-কানেক্টিভিটি বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা-থিম্পু এখন সপ্তাহে মাত্র দু’টি ফ্লাইট আছে, এটি বাড়ানো প্রয়োজন, কারণ ভুটান অত্যন্ত সুন্দর দেশ, যে একবার গেছে, সে বারবার যেতে চায়। মানুষ যাতে সড়ক পথে গাড়ি নিয়ে যেতে পারে, সে নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমি কয়েকবার গেছি, বর্তমান রাজার বিবাহ উৎসবেও যোগ দিয়েছি। গত বছর তিনি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার সময় যাত্রাবিরতিতে আমি তাঁকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়েছিলাম।
ড. হাছান আরো বলেন, ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি আলোচনা হয়েছে, ভারত এ ক্ষেত্রে সহায়তা করবে। আপনারা জানেন কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য তাদেরকে জায়গা দিতে যাচ্ছি। এ দিন ভুটানের রাজার সাথে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ভুটানের থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা, কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তা সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি পুনঃনবায়নের কথা উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে এই সফরে চুক্তি হচ্ছে না। ভারত যেভাবে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে সহায়তা করেছে, ভুটান থেকে আমদানির ক্ষেত্রেও ভারত সহায়তা করবে। বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
২৫-২৮ মার্চ সফরে ভুটানের রাজা সোমবার এসেই ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শন করেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের পাশাপাশি তিনি পদ্মা সেতু, শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউিট অভ বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্পেশাল ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করবেন। শেষদিন ২৮ মার্চ কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন শেষে বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে রাজা বাংলাদশে ত্যাগ করবেন। ভুটানের রানি, পরিবারের সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রিগণ ও পদস্থ কর্মকর্তারা রাজার সফরসঙ্গী হিসেবে সফরে যোগ দিয়েছেন।