বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবসে প্রধানমন্ত্রীর ও রাষ্ট্রপতির বাণী
প্রধানমন্ত্রীর বাণী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ এপ্রিল ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস’ উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০১৯’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘Reach for Gold: IP and Sports’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি। মানুষের শরীর ও মন সুস্থ রাখতে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। খেলাধুলার মাধ্যমে শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি নতুন নতুন উদ্ভাবনী কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করা যায়। আমরা যখনই সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছি, দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে গতিশীল করেছি। আমরা বিগত ১০ বছর ধরে খেলাধুলার উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যায় থেকে প্রতিভা অন্বেষণ করে তাদের উপযুুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে প্রস্তুত করা হচ্ছে। আমাদের এ সকল পদক্ষেপে তৃণমূল থেকে নতুন নতুন খেলোয়াড় উঠে আসছে, যারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য বয়ে আনছে। দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে মেধাসম্পদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে ক্রীড়াক্ষেত্রের প্রসারতার সাথে সাথে নানা রকম প্রযুক্তি উদ্ভাবন হচ্ছে। বিভিন্ন রকম ক্রীড়া সরঞ্জাম বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে এগুলোর মেধাসম্পদ সংরক্ষণের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) মেধাসম্পদের সুরক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এবারের বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবসে ডিপিডিটি’র সঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ তথা বিভিন্ন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব সম্পৃক্ত হচ্ছেন। এর ফলে ক্রীড়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিবর্গের মেধাসম্পদ বিষয়ে আরো সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে বলে আমি মনে করি। আমি ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০১৯’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
রাষ্ট্রপতির বাণী: রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ২৬ এপ্রিল ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস’ উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস, ২০১৯’ উদযাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় ‘Reach for Gold: IP and Sports’ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে আমি মনে করি। বৈশ্বিক ক্রীড়া উন্নয়নে এবং উপভোগে নতুনত্বের প্রবর্তন, সৃজনশীলতা এবং মেধাসম্পদের অধিকার অনস্বীকার্য। ক্রীড়া শারীরিক ও মানসিক বিকাশের পাশাপাশি দেশকে বিশ্ব পরিমন্ডলে মর্যাদার সাথে তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্রীড়া নৈপুণ্যে বাংলাদেশ সৃজনশীলতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের সহযাত্রী হিসেবে নবযাত্রা করেছে। বিশ্বায়নের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। মেধাভিত্তিক শিল্প ও অর্থনীতি গড়ে তোলার মাধ্যমে এটা অর্জন করা সম্ভব। এক্ষেত্রে ক্রীড়ার মাধ্যমে নতুন নতুন বিশ্বমানের খেলোয়াড় তৈরি, সৃজনশীল ক্রীড়াসামগ্রী তৈরি এবং এর বিপণন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে আরো বেগবান করে তুলতে পারে। নব নব উদ্ভাবিত ক্রীড়াপ্রযুক্তি বা এর বিপণনের ক্ষেত্রে মেধাসম্পদের সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে। শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে সনাতনী প্রযুক্তি ও ধ্যান-ধারণা পরিহার করে মানুষের সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশের বস্তুগত সম্পদ সীমাবদ্ধ থাকলেও মেধাসম্পদের দিক থেকে আমরা কোনভাবেই পিছিয়ে নেই। তাই এর যথাযথ ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি বলে আমি মনে করি। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সৃজনশীলতার প্রতিযোগিতা চলছে। যেসব জাতি সৃষ্টিশীলতায় অগ্রণী তারাই পৃথিবীর নেতৃত্ব দিচ্ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আমাদের সীমিত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উদযাপনের প্রাক্কালে আমি দেশের সকল ক্রীড়ামোদী ব্যক্তিত্ব, উদ্ভাবক, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, গবেষকবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে মেধাসম্পদ সংরক্ষণ এবং এর যথাযথ ব্যবহারে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন ছিল একটি সুস্থ-সবল জ্ঞানভিত্তিক জাতি গঠন করা। সে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপায়িত করার দায়িত্ব বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের হাতে। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হবে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এ অনুষ্ঠান দুটি অত্যন্ত সাড়ম্বরে উদযাপনের জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই। আমি বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবসের সফলতা কামনা করছি। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”