প্রধান মেনু

বিশ্ব বেতার দিবস ও শ্রোতাক্লাব সম্মেলন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বাণী

প্রধানমন্ত্রীর বাণীঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব বেতার দিবস ও শ্রোতাক্লাব সম্মেলন ২০১৯ উপলক্ষে নিম্নোক্তবাণী প্রদান করেছেন : “বিশ্ব বেতার দিবস ও বাংলাদেশ বেতারের শ্রোতাক্লাব সম্মেলন ২০১৯ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের বেতার শ্রোতা, কলাকুশলী ও সম্প্রচার কর্মীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। ১৯৩৯ সালের ১৬ই ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করার পর থেকে বেতার এ অঞ্চলের সকল অধিকার আদায়ের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, দারিদ্র্যমোচন, কৃষি উন্নয়ন, শিক্ষারহারবৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসসহ সার্বিক উন্নয়নে বেতারের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ভূমিকা জাতিকে আজীবন কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করে রাখবে। আমাদের সরকার জাতীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করেছে। জাতীয় তথ্য বাতায়ন এবং ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র চালু করে আমরা তথ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে গেছি। আমরা দেশে সর্বপ্রথম জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালাসহ তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন ও তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছি। বেসরকারিখাতে ৪৪টি টেলিভিশন, ২২টি এফএম রেডিও এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিও চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশের গণমাধ্যম এখন পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে।

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে বাংলাদেশ বেতার স্বাধীনতা উত্তর দেশ গঠনে অনবদ্য ভূমিকা রেখে আসছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর থেকে এক উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নে বিভোর থেকে আমরা যে নিরলস পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছি, বাংলাদেশ বেতার তা পৌঁছে দিচ্ছে দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে। দেশে বিদেশে সর্বত্র গড়ে তুলছে বাংলাদেশের একটি ইতিবাচক ভাবমূর্তি। ইতোমধ্যে আমরা অর্জন করেছি কাক্সিক্ষত মধ্যম আয়ের দেশের খেতাব।

একবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগেই বাংলাদেশের উন্নয়ন তরী পৌঁছে যাবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপর বন্দরে। সেই পথচলায় বাংলাদেশ বেতারের প্রতিটি কর্মী যার যার অবস্থান থেকে অবদান রাখবে বিশ্ব বেতার দিবস ও শ্রোতা সম্মেলন ২০১৯ এ আমার প্রত্যাশা। আমি বিশ্ব বেতার দিবস ও শ্রোতাক্লাব সম্মেলন ২০১৯-এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

রাষ্ট্রপতির বাণীঃ রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্তবাণী প্রদান করেছেন :“বিশ্ব বেতার দিবস ২০১৯ উপলক্ষে আমি বেতারের শ্রোতাম-লীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। একই সাথে বিশ্ব বেতার দিবসে বাংলাদেশ বেতারের শ্রোতা সম্মেলন ২০১৯ আয়োজন ও স্মরণিকা প্রকাশের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। বিশ্বব্যাপী বেতার একটি জনপ্রিয় গণমাধ্যম। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে সহজলভ্যতার কারণে মানুষের কাছে বেতার একটি গ্রহণযোগ্য গণমাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।

বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন দেশ-জাতি-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত ও হানাহানি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভিন্ন ধর্ম,বর্ণ ও মতের প্রতি অসহিষ্ণুতা, আধিপত্য প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি সকল সংঘাত, যুদ্ধ-বিগ্রহের মূল কারণ। শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠারক্ষেত্রে সংলাপ ও সহনশীল মনোভাবের বিকল্প নেই। প্রচার কার্যক্রমে এ বিষয়গুলোকে তুলে ধরার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত করতে বেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে বিশ্ব বেতার দিবস ২০১৯ এর প্রতিপাদ্য “সংলাপ, সহনশীলতা ও শান্তি” অত্যন্ত যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।

বাংলাদেশ বেতার দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ হিসেবে আত্মপ্রকাশের মধ্য দিয়ে এ প্রতিষ্ঠান আমাদের মহান মুক্তিসংগ্রামে অনন্য ভূমিকা পালন করে। সারাদেশে বাংলাদেশ বেতারের দুই হাজারের অধিক শ্রোতা ক্লাব রয়েছে। শ্রোতাক্লাবগুলোকে শিশুদের স্কুলে ভর্তি, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, যৌতুক নিরোধ, নারী শিক্ষার প্রসার, ডিজিটাল বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে সরকারের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রমকে বেগবান করা সম্ভব। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ও দেশের সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে বাংলাদেশ বেতার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে – এ প্রত্যাশা করি। আমি বিশ্ব বেতার দিবস ২০১৯ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”