প্রধান মেনু

বিশ্ব পরিবেশ দিবসে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযথ গুরুত্বের সাথে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি এ বছরে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘ঈড়হহবপঃরহম চবড়ঢ়ষব ঃড় ঘধঃঁৎব’ যার ভাবার্থ করা হয়েছে ‘প্রাণের স্পন্দনে, প্রকৃতির বন্ধনে’। আর স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ও’স রিঃয ঘধঃঁৎব’ যার ভাবার্থ- আমি প্রকৃতির, প্রকৃতি আমার’। বিশ্বব্যাপী পরিবেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য ও স্লোগান যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
মানুষ ও প্রকৃতির বন্ধন অবিচ্ছেদ্য। সকল প্রাণী ও উদ্ভিদ জগতের অস্তিত্ব প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। প্রকৃতির মাঝে গড়ে ওঠা প্রতিবেশ ব্যবস্থা (ঊপড়-ংুংঃবস) তার সেবা দিয়ে সকলকে বাঁচিয়ে রাখে। কিন্তু দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে ওঠা শিল্পায়ন, নগরায়ন ও বিলাসী জীবন-আচরণ প্রকৃতি ও প্রতিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করছে।
প্রকৃতি ও প্রতিবেশ বিশেষত ঃ নদী, পাহাড়, বন বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় সরকার খুবই সচেতন। সব ধরনের দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সরকার পরিবেশ সংক্রান্ত নীতি ও আইন যুগোপযোগী করেছে ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। গরষষবহহরঁস উবাবষড়ঢ়সবহঃ এড়ধষং এর বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা ও সূচকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেভাবে সাফল্য লাভ করেছে, তারই ধারাবাহিকতায় ঝঁংঃধরহধনষব উবাবষড়ঢ়সবহঃ এড়ধষং অর্জনের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ঝউএং এর লক্ষ্যমাত্রা ও সূচকসমূহ চিহ্নিত করে তা নির্ধারিত সময়ে অর্জনের জন্য একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। ঝউএং লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জিত হলে দেশের পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হবে বলে আমার বিশ্বাস।
বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রকৃতির জন্য ক্ষতিকর এমন কাজ থেকে বিরত থাকি; প্রকৃতিকে বাঁচাই, নিজেও বাঁচি- এটাই হোক এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবসে সকলের অঙ্গীকার।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০১৭ উদ্যাপন সফল হোক – এ কামনা করি।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“জাতিসংঘের অন্যান্য সদস্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ৫ জুন ২০১৭ বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।
বিশ্ব পরিবেশ দিবসের এবারের স্লোগান ‘ও’স রিঃয ঘধঃঁৎব’ অর্থাৎ ‘আমি প্রকৃতির, প্রকৃতি আমার’ এবং প্রতিপাদ্য ‘ঈড়হহবপঃরহম চবড়ঢ়ষব ঃড় ঘধঃঁৎব’ অর্থাৎ ‘প্রাণের স্পন্দনে, প্রকৃতির বন্ধনে’ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়েছে বলে আমি মনে করি।
প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্ক নিবিড়। প্রকৃতির অমূল্য দান পানি, বায়ু, উর্বর মাটি ও মূল্যবান প্রকৃতির সম্পদ আমাদের জীবন ও জীবিকার চালিকাশক্তি। প্রকৃতির সাথে গ্রামীণ জনমানুষের জীবনের নিবিড় ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও মানুষের অপরিণামদর্শী কার্যকলাপে প্রকৃতি ও পরিবেশ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছে। এর প্রভাবে আমরা হারাতে বসেছি প্রতিবেশের সেবা, হারিয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্র্য। মানবসৃষ্ট পরিবেশ দূষণ, বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং মাত্রাতিরিক্ত সম্পদের ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট প্রতিবেশগত বিপর্যয়ের ফলে সর্বাগ্রে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর সরাসরি নির্ভরশীল গ্রামীণ ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী।
আওয়ামী লীগ সরকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং এর উপদানসমূহের টেকসই ব্যবহারকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন, ২০১৭ জারি করা হয়েছে। নদীদূষণ রোধসহ নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। শিল্পকারখানার বর্জ্য হতে নদ-নদী, জলাভূমি ও জলাধারসমূহ রক্ষায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানে তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলার লক্ষ্যে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছি।
আমি আশা করি, বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের মাধ্যমে প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণে জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পাবে। দেশের আপামর জনসাধারণকে প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় সরকারের পাশাপাশি একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাই।
আমি বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০১৭ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”