বায়তুল লতিফ জামে মসজিদ পরিচালনা নিয়ে প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ফরিদপুরের মাচ্চর ইউনিয়নের কোঁওরপুরে স্থাপিত বায়তুল লতিফ জামে মসজিদ পরিচালনা নিয়ে তীব্র বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ২২ হাজার বকেয়া পড়েছে বিদ্যুতের বিল। বন্ধ হয়ে গেছে ইমাম-মুয়াজ্জিনের বেতন। ২০০২ সালে কোঁওড়পুর গ্রামের সম্ভান্ত খন্দকার পরিবারের দুই গৃহবধূ খন্দকার আব্দুল জব্বারের স্ত্রী সামসুন নাহার বেগম এবং খন্দকার আব্দুল গফফার সাহেবের স্ত্রী কুলসুম নেসা খাতুন তাদের স্বামীর নসিহত অনুযায়ী ১০ শতাংশ জমি দান করেন মসজিদটি নির্মাণে। এরপর মসজিদের নামে ওই সম্পত্তি ওয়াকফ করা হয়। প্রায় ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় মসজিদ ভবন। মসজিদ ভবন নির্মাণে একটি কমিটি করা হয় যার সভাপতি হন খন্দকার আসাদুজ্জামান রেজা। ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি সভাপতি ছিলেন।
এরপর তার বড় ছেলে খন্দকার সাব্বির রেজা তারেক সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। অবশ্য মুখে মুখে গঠিত এই কমিটিতে স্বচ্ছতার কোন নিয়ম মানা হয়নি। মেইনটেন করা হয়নি হিসাবখাতা। সভা কিংবা রেজুলেশন করে কখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এসব কারণে সভাপতির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেন মুসুল্লিরা। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরে গত ফেব্রুয়ারি মাসে এনিয়ে তুমুল হট্টগোলের মুখে হাজী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে সভাপতি করে নতুন কমিটি করা হয়। সেক্রেটারি হিসেবে বহাল থাকেন সাবেক সেক্রেটারি মিজানুর রহমান খান।
মসজিদ কমিটির সভাপতি হাজী মো. আলী জিন্নাহর ছেলে মাসুদ রানা বলেন, খন্দকার আসাদুজ্জামান রেজা ও তার পুত্র আরিফ খন্দকার ও সাবেক মসজিদ কমিটির সভাপতি তার ছেলে খন্দকার সাব্বির রেজা তারেকের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করলে তারা মুসুল্লিদের বিভিন্ন সময়ময় গালিগালাজ করে মসজিদে আসতে নিষেধ করেন।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, সাবেক মসজিদ কমিটির সভাপতি খন্দকার সাব্বির রেজা তারেক ও কোষাধ্যক্ষ জাকির মল্লিক তারা নিজেদের মতো করে মসজিদের আয়ব্যয়ের হিসাব রাখতেন। কোন লিখিত হিসাব তারা দেখাতেন না। এমনকি কোন মিটিংও করতেন না। আমরা আসলে তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতেও পারতাম না। কারণ বললে কাজ হতোনা।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আলী জিন্নাহ বলেন, আমি সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পরে উপস্থিত মুসল্লিদের সকলের সর্বসম্মতিক্রমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরি করি। এরপর আমি তখন একটি জামাত পাঠাই সাবেক সভাপতির কাছে যে, আপনারা এসে আমাদের সাথে নামাজ পড়েন এবং মসজিদ পরিচালনায় আমাদের সাহায্য সহযোগিতা করেন। ইমাম সাহেবকেও পাঠালাম। তারা আমাদের প্রস্তাবতো শুনলেনই না, উপরন্তু ইমাম সাহেবকে পরে ডেকে নিয়ে বললেন, তোমাদের বেতনতো দিবোই না, এবং তোমাদের ওখানে ইফতারিতেও যাবোনা, তুমি সাবধানে থাকো। তিনি বলেন, উনারা এই ইমাম সাহেবকেও সরিয়ে দিতে চাইছেন।
এব্যাপারে মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান রেজার সাথে কথা হলে তিনি তার ও তার ছেলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কখনোই সভাপতি ছিলাম না৷ রুস্তম।মোহরি সভাপতি ছিলো। আমি তাকে সাহায্য করতাম। তিনি বলেন, এটি একটি পারিবারিক মসজিদ। বাইরের কোন দান আসেনা। আমরা নিজেরাই টাকা পয়সা দিয়ে ইমাম-মুয়াজ্জিনের বেতন দিতাম। আর আমি কাউকে মসজিদ আসতে নিষেধও করিনি। ওরা বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে এসব কথা ছড়াচ্ছে। আমি এসবের তীব্র প্রতিবাদ করি।
খন্দকার সাব্বির রেজা তারেক বলেন, আমিতো বাড়িতেই থাকিনা। আমার বিরুদ্ধে তারা কি অভিযোগ করবে? তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে বিদ্যুতের বকেয়া পরিশোধ করে দিবো।
« ৫শত পরিবারের মাঝে পরিবেশমন্ত্রীর খাদ্যসামগ্রী বিতরণ (পূর্বের খবর)