বস্তিবাসীর জন্য ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে — গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী
নগরদারিদ্র্যের শিকার বস্তিবাসীদের জন্য সরকার মিরপুরের বাউনিয়ায় ১০ একর জমির ওপর ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করছে। এরমধ্যে ৫৫০টি ফ্ল্যাটের নির্মাণ কাজ শীঘ্রই শুরু করা হচ্ছে। খুব অল্প ও সহজে পরিশোধযোগ্য ভাড়াভিত্তিতে এসব ফ্ল্যাটে বস্তিবাসীরা থাকবে। এখনও বস্তিতে থাকতে হলে ভাড়া প্রদান করতে হয়। একশ্রেণির অসাধু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এ টাকা পাচ্ছে। কিন্তু বস্তির লোকদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এছাড়া দারুস সালামে হাউজিং এন্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটে বস্তিবাসীদের জন্য আরো ১ হাজার ৫৩টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে এবং বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ৩টি জেলার ১৯টি বস্তিতে ৫ হাজার ৭০০ পরিবারের জন্য উন্নত আবাসন সুবিধা গড়ে তোলা হচ্ছে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন আজ ব্র্যাক আরবান ডেভেলপমেন্ট ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ আয়োজিত হাউজিং ফাইন্যান্স ফর পিপল লিভিং ইন আরবান পোভার্টি শীর্ষক জাতীয় কনভেনশনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে গ্রামে যত্রতত্র বাড়িঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এরফলে প্রতিদিন ২৩৫ হেক্টর কৃষিজমি নষ্ট হচ্ছে। এটা কোনভাবেই দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। তাই গ্রামেও এখন বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে কৃষিজমি রক্ষা করতে হবে। এক্ষেত্রে ব্র্যাক এগিয়ে এলে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। কৃষিজমি সুরক্ষার জন্য নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভায় এ আইনের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন পাওয়া গেছে। এ আইন পাস হলে গ্রামে বাড়ি করতেও যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর দেশের ১৪টি উপজেলার বিশদ পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে পায়রা সমুদ্রবন্দর ও কুয়াকাটাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আরো সাতটি উপজেলার বিশদ পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু করা হয়েছে। কৃষিজমি সুরক্ষায় পর্যায়ক্রমে গোটা দেশের বিশদ পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। বস্তিবাসীর উন্নয়নে ঢাকা মহানগরসহ দেশের যেকোন জেলায় বহুতল ভবন নির্মাণে ব্র্যাক ও যে কোন বেসরকারি সংস্থা এগিয়ে এলে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দাকার, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান খন্দকার আখতারুজ্জামান, নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরে পরিচালক ড. খুরশীদ জাবিন হোসেন তৌফিক প্রমুখ। উপস্থাপিত আবাসন মডেলের মডারেটরের দায়িত্ব পালন করে মেয়র্স অ্যাসোসিয়েশন অভ্ বাংলাদেশের ভাইসপ্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান। সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের সিনিয়র কর্মকর্তা আসিফ সালেহ।
অনুষ্ঠানে বস্তিবাসীর জন্য জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, ব্র্যাক ও ইউএনডিপি’র তিনটি আবাসন মডেল উপস্থাপন করা হয়। এসব মডেলের ওপর অংশগ্রহণকারীগণ আলোচনা-পর্যালোচনা করে সরকারের কাছে সুপারিশমালা উপস্থাপন করবে। কনভেনশনে রাজশাহী ও খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিকল্পনাবিদ, বিভিন্ন পৌরসভার মেয়র ও সরকারি কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করছেন।