পাঁচবিবির নিহত মোটর শ্রমিক শাহীনুরের অসহায় পরিবারের খোঁজ রাখেনি কেউ
পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ মোটর শ্রমিক শাহীনুর নিহতের ১ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ খোঁজ রাখেনি তার পরিবারের। খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছে পরিবারটি। স্বামীর শোকে কেঁদে কেঁদে চোখের জল যেন শুকিয়ে গেছে মুর্শিদার (৩০)। মুর্শিদা কখনও ভাবেনি তার সাজানো গোছানো সংসার নিমিষেই তছনছ হয়ে যাবে। এস,আই পরিবহনের হেল্পার শাহীনুর জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার পশ্চিম বালিঘাটা গ্রামের ছায়ের উদ্দিনের ছেলে।
২০১৭ সালের ১ মার্চ ঢাকার গাবতলীতে পুলিশের সাথে শ্রমিকদের সংঘর্ষ বাধে। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই শাহীনুরের বুকে গুলি লাগে। মুহূতের মধ্যেই তার জীবনের প্রদীপ নিভে যায়। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামীকে হারিয়ে ২ সন্তানকে নিয়ে চোখে অন্ধকার দেখছে মুর্শিদা।স্বামী বেঁচে থাকতে সন্তানদের খাবার কষ্ট হতোনা। এখন দু মুঠো ভাতের জন্য অন্যের বাড়িতে ঝিঁ এর কাজ করতে হয়। বড় ছেলে মুছা এবার জেএসসি পরীক্ষার্থী।তার লেখা পড়ার খরচ যোগানো কষ্ট সাধ্য। ছোট ছেলে মেসবাকে এক হৃদয়বান ব্যক্তি গো-হাটা আব্দুর রহমান আলিম মাদ্রাসায় প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করিয়েছেন।
অশ্রুসিক্ত কন্ঠে মুর্শিদা বলেন,স্বামীকে হারিয়ে আমি এখন জীবন্ত লাশ। খুব ভাল একজন স্বামী পেয়েছিলাম কিন্তু হারিয়েছি। স্বামী মারা যাবার পর অনেকে আমাকে সান্তনা দিয়েছিল। এতিম সন্তানদের জন্য অর্থনৈতিক সহযোগীতা করতে চেয়েছিল।পরে আর কেউ খোঁজ রাখেনি। শুধু জয়পুরহাট মটর শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে ৩০ হাজার টাকা পেয়েছি। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে শাহীনূরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় দারিদ্রতার চরম কষাঘাতে পরিবারটি জর্জরিত। ঘরে খাবার নেই।
ছোট্ট একটি মাটির ঘরে টিনের চালা নষ্ট হয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে। টিউবয়েল নেই,টয়লেটও নেই। টিনের জন্য এক জনপ্রতিনিধির কাছে ধরনা দিয়েও কোন ফল পায়নি। মুর্শিদার সাথে পরিবারের দু:খ দুর্দশার কথা বলতে বলতে হাউ মাউ করে কেঁদে ফেলেন। এসময় বাবার আদর- স্নেহ বঞ্চিত এতিম সন্তানের চোখেও জল ছলছল করছিল।