নৌ নিরাপত্তা ও নৌ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সাতটি কোস্টাল রেডিও স্টেশন ও লাইট হাউজ স্থাপনের উদ্যোগ
নৌ নিরাপত্তা প্রসার ও নৌ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উন্নতির লক্ষ্যে অত্যাধুনিক‘কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টার’সহ দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে সাতটি কোস্টাল রেডিও স্টেশনও লাইট হাউজ (বাতিঘর) স্থাপন করা হবে। ‘গ্লোবাল মেরিটাইম ডিসট্রেস এন্ডসেইফটি সিস্টেম এন্ড ইন্টিগ্রেটেড মেরিটাইম নেভিগেশন সিস্টেম’(জিএমডিএসএস এন্ড আইএমএনএস) প্রকল্পের আওতায় এসব কার্যক্রম বাস্তবায়িতহবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২৪ ঘণ্টা জাহাজের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন,আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থার (আইএমও) আন্তর্জাতিক কনভেনশনের চাহিদা পূরণ,আধুনিক নেভিগেশনাল সহায়তা, ভেসেল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নৌ-নিরাপত্তা প্রসারিত করা সম্ভব হবে। এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকাস্থ আগারগাঁওয়ে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় এবং কার্যালয়ের ৮ম তলায় ‘কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টার’ স্থাপন করা হবে। ১১ তলা বিশিষ্ট ভবনটির প্রথম পর্যায়ে আট তলা পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে। গতকাল (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকাস্থ আগারগাঁওয়ে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টার-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বর্তমানে কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন ও কুতুবদিয়ায় অবস্থিত লাইট হাউজসমূহ আধুুনিকীকরণ এবং নিঝুমদ্বীপ, ঢালচর, দুবলারচর ও কুয়াকাটায় নতুন লাইটহাউজ ও কোস্টাল রেডিও স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে মেরিটাইম ডিজাস্টার ব্যবস্থাপনা উন্নতিকরণসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় এলাকায় সকল ধরণের জাহাজ, নৌকা, ট্রলার ইত্যাদি উদ্ধার কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান করা যাবে।
এছাড়া সমুদ্রের যে কোনো স্থানে জাহাজ বিপদগ্রস্ত হলে জিএমডিএসএস সিস্টেমের মাধ্যমে বাংলাদেশের যে কোনো জাহাজের অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব হবে এবং পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী যে কোনো দেশের মেরিটাইম রেসকিউ কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের মাধ্যমে জাহাজ ও জাহাজের নাবিকদের অবস্থান নির্ণয় করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী বা বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সাহায্যে উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করা সহজ হবে।নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নৌপরিবহন অধিদপ্তর কর্তৃক কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের (জিওবি) এর যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। এজন্য ব্যয় হবে ৪৫৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থ ১৬৪ কোটি ৪১ লাখ এবং কোরিয়ার প্রকল্প সাহায্য ২৯১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
প্রকল্পের কাজ কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান এলজি-সামহিকন সোর্টিয়াম যৌথভাবে সম্পাদন করবে। বর্তমানে ৩টি (কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন ও কুতুবদিয়া) লাইট হাউজের মাধ্যমে সরকার প্রতি বছর বিদেশি জাহাজ হতে আনুমানিক ১৪ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করছে। প্রকল্পটি শেষ হলে ৭টি লাইট হাউজের মাধ্যমে এ খাতে সরকারের রাজস্ব আয় বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। এসময় অন্যান্যের মধ্যে অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি নূর-ই-আলম চৌধুরী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবদুস সামাদ এবং নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।