নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বাণী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“প্রতি বছরের মতো এবারও ২৮ মে দেশব্যাপী ‘নিরাপদ মাতৃত্ব’ উদ্যাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘নিরাপদ প্রসব চাই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চল যাই’- যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে। গর্ভবতী নারীদের দক্ষ সেবাদানকারীর নিকট প্রসূতি সেবা গ্রহণের উদ্বুদ্ধ করার জন্য প্রতিপাদ্যটি নির্ধারণ করা হয়েছে। যথাসময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে গর্ভবতী নারীর জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপদ প্রসব নিশ্চিত করে মা ও শিশুকে সুরক্ষিত করাই এ দিবসের অঙ্গীকার।
আমাদের সরকার গত প্রায় সাড়ে ৮ বছরে দেশের স্বাস্থ্যখাত বিশেষ করে মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুস্বাস্থ্যের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। নতুন হাসপাতাল নির্মাণ, হাসাপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি, প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ, মাতৃমৃত্যু হ্রাসে জরুরি প্রসূতি সেবা প্রদান, মিডওয়াইফারি কোর্স চালু করা, দরিদ্র ও দুস্থ মায়েদের জন্য মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কীম চালু করা, কমিউনিটিভিত্তিক স্কিল্ডবার্থ এটেনডেন্ট প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি ও টিকাদান কর্মসূচি সাফল্যজনকভাবে বাস্তবায়নের ফলে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হার উল্লেখযোগ্য হ্রাস পেয়েছে। আমাদের এ সাফল্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমরা জাতিসংঘের এমডিজি অ্যাওয়ার্ড ও সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি।
সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় শিশু ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সহ¯্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি-৪) নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই অর্জিত হয়েছে এবং মাতৃস্বাস্থ্য বিষয়ক সহ¯্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি-৫) অর্জনে যথেষ্ট অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। দেশের মাতৃমৃত্যু হার প্রতি লাখ জীবিত জন্মে ৭০ এর নিচে নামিয়ে এনে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাও (এসডিজি) অর্জিত হবে বলে আমি আশা করি।
স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে দক্ষ সেবাদানকারীর মাধ্যমে নিরাপদ মাতৃত্ব সেবা গ্রহণের জন্য সকল নারীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
আমি ‘নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস’ ২০১৭ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস, ২০১৭ উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন:
“‘নিরাপদ প্রসব চাই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চল যাই’ প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশব্যাপী ‘নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস, ২০১৭’ উদ্যাপন হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।
একটি দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির অন্যতম সূচক প্রসবজনিত মাতৃমৃত্যু হার। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রসবজনিত কারণে প্রতি এক লাখে ১৭৬ জন মায়ের মৃত্যু হয়। যদিও মাতৃত্বজনিত কারণে একটি মৃত্যুও কাম্য নয়। ‘মা ও নবজাতকের মৃত্যু এবং অসুস্থতা রোধ’ বর্তমান সরকারের একটি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত কার্যক্রম। নিরাপদ প্রসব মা ও নবজাতকের সুস্থতা নিশ্চিতকরণসহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভবিষ্যতের জন্য একটি স্বাস্থ্যবান, আত্মমর্যাদাশীল জাতি গঠনে সহায়তা করে।
নিরাপদ প্রসব নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান সরকার তৃণমূল পর্যায় হতে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সকল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। বিশেষ করে সকল সরকারি স¦াস্থ্য কেন্দ্র হতে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য গুণগত মানসম্পন্ন সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য স¦াস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সংযুক্তিসহ যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
নিরাপদ প্রসবের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের বিকল্প নেই। আমি আশা করি, প্রত্যেক গর্ভবতী মহিলার জন্য প্রসবকালীন সময়ে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত স¦াস্থ্যকর্মী ও পরিবারের সদস্যবৃন্দ প্রসব পরিকল্পনার মাধ্যমে সরকারি স¦াস্থ্যকেন্দ্রে দক্ষ সেবাদানকারীর মাধ্যমে প্রসবের ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অর্জনসমূহ বজায় রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ‘নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস, ২০১৭’ উদ্যাপন ইতিবাচক অবদান রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
‘নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস, ২০১৭’ পালন উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করি।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”