দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির বাণী
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“বাঙালি হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সারাদেশে যথাযথ উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদির মধ্য দিয়ে সাড়ম্বরে দুর্গাপূজা উদ্যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বহির্বিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায়ের সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
দুুর্গা পৌরাণিক দেবতা। তিনি আদ্যাশক্তি, মহামায়া, শিবানী, ভবানী, দশভুজা, সিংহবাহনা ইত্যাদি নামে অভিহিত হন। জীবের দুর্গতি নাশ করেন বলে তাঁকে দুর্গা বলা হয়। সমাজে অন্যায়, অবিচার, অশুভ ও অসুর শক্তি দমনের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আবহমানকাল ধরে এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে নানা উপচার ও অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে দুর্গাপূজা উদ্যাপন করে আসছে। দুর্গাপূজা কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়, সামাজিক উৎসবও। দুর্গোৎসব উপলক্ষে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পরিবারপরিজন, পাড়াপ্রতিবেশী একত্রিত হন এবং অর্চনার পাশাপাশি সকলে আনন্দ-উৎসবে মিলিত হন। তাই এ উৎসব সার্বজনীন।
দুর্গাপূজার সাথে মিশে আছে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি দুর্গাপূজা দেশের জনগণের মাঝে পারস্পরিক সহমর্মিতা ও ঐক্য সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শারদীয় দুর্গোৎসব সত্য-সুন্দরের আলোকে ভাস্বর হয়ে উঠুক; ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যরে বন্ধনকে আরো সুসংহত করুক এ কামনা করি।
মানবতাই ধর্মের শাশ্বত বাণী। ধর্ম মানুষকে ন্যায় ও কল্যাণের পথে আহ্বান করে, অন্যায় ও অসত্য থেকে দূরে রাখে, মানবতার মুক্তির পথ দেখায়। তাই ধর্মীয় অনুশাসন মেনেচলার পাশাপাশি আমাদেরকে মানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে হবে। দুঃস্থ ও অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাঙালির চিরকালীন ঐতিহ্য। সম্মিলিতভাবে এ ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিতে হবে আমাদের সামগ্রিক অগ্রযাত্রায়। আবহমান বাঙালি সংস্কৃতিতে ঋদ্ধ অসাম্প্রদায়িক চেতনা, পারস্পরিক ঐক্য, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে উদ্বুদ্ধ করুক, বিশ্ব মানবতার জয় হোক-এ প্রত্যাশা করি।
শারদীয় দুর্গোৎসব সফল হোক-এ কামনা করি।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বাণী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ সেপ্টেম্বর শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে আমি দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকল নাগরিককে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।
দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি আজ সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
বাংলাদেশ ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি। ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ এ মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে আমরা সবাই একসাথে উৎসব পালন করব। আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। সকলে মিলে যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। তাই এ দেশ আমাদের সকলের।
আমার প্রত্যাশা, বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সক্ষম হব।
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ সকল নাগরিকের শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”