দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে কারিগরি শিক্ষাকে এগিয়ে নেওয়া হবে — শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, শিক্ষাক্ষেত্রে গত নয় বছরে যুগান্তকারী পরিবর্তন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, দর্শন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। সকলের মতামতের ভিত্তিতে শিক্ষানীতি প্রণতি হয়েছে। তিনি বলেন, প্রায় সকল শিশু এখন স্কুলে যাচ্ছে। যদিও ঝরে পড়া এখনও একটি বড় সমস্যা। শিক্ষাক্ষেত্রে মাধ্যমিক পর্যন্ত ছেলে-মেয়ের মধ্যে সমতা অর্জিত হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে। শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। ভর্তি প্রক্রিয়া এবং সকল পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল পেপারলেস করা হয়েছে। ভর্তি কার্যক্রম, পরীক্ষা গ্রহণ এবং ফলাফল প্রকাশ সময়মত হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী আজ ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনা: বাস্তবায়নে গতি প্রকৃতি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ সব কথা বলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপকমিটির উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতিটি শিশুকে বছরের প্রথম দিনে বই দেওয়া হচ্ছে। প্রাকপ্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত এ বছর ৩৫ কোটি ৪২ লাখ পাঠ্য পুস্তক বিতরণ করা হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট বই বিতরণ করা হয়েছে ২৬৫ কোটি ৯৯ লাখ। পাঠ্য পুস্তক প্রদানের ফলে ঝরে পড়ার হার কমছে। সাধারণ বৃত্তি, উপবৃত্তি ও মেধাবৃত্তিসহ ২ কোটি ৬৬ লাখ শিক্ষার্থী বৃত্তি পায়। কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষকের সংকট রয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমানে ৭ হাজারের বেশি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কারিগরি শিক্ষার প্রসারে ও মান বাড়াতে আরো মানসম্পন্ন শিক্ষক প্রয়োজন। কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মান বৃদ্ধির জন্য সিঙ্গাপুরের নানিয়ান পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ১ হাজার ১৫০ জন শিক্ষককে ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। চীনে ৫৮১ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে ভবিষ্যতে অবশ্যই কারিগরি শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যাব। ২০২০ সালে কারিগরি শিক্ষায় এনরোলমেন্ট ২০ ভাগে উন্নীত করা হবে। সকল নাগরিককে বেসিক শিক্ষা দিতে হবে। এর মধ্যে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষা এবং যে কোন একটি কারিগরি ট্রেডে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে অবকাঠামো নির্মাণে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে। ২০২০ সাল নাগাদ প্রায় ২৪ হাজার ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবদুল খালেকের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. নাসরীন আহমাদ এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মুহাম্মদ সামাদ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক। আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব শামসুন নাহার চাঁপা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।