তিন স্তরে ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান — তথ্যমন্ত্রী
তাৎক্ষণিক, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদ-এই তিন স্তরে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও জাতিসংঘের ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব, বলেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
আজ ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ও এটিএন বাংলার যৌথ আয়োজনে রাজধানীর এফডিসিতে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা নিয়ে এক ছায়া সংসদ বিতর্ক অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন। আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
হাসানুল হক ইনু বলেন, মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। তাদের বর্বরোচিত নির্যাতন, গণহত্যা এবং অত্যাচারের ফলে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। ফলে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা আমাদের ওপর এসে পড়েছে। কিন্তু মিয়ানমার বাংলাদেশ আক্রমণ করেনি, আমরাও মিয়ানমার আক্রমণ করিনি। এটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা যা ধৈর্য ধরে মুন্সিয়ানার সাথে মোকাবিলা করতে শেখ হাসিনার সরকার তাৎক্ষণিকভাবে মানবিক, স্বল্পমেয়াদে ২ হাজার একর জমিতে জরুরি আবাসন ও প্রয়োজনে দীর্ঘমেয়াদে চরাঞ্চলে অস্থায়ী আবাসন-এই তিন স্তর পরিকল্পনা করছে।
উদ্বাস্তু সংকটের স্থায়ী সমাধানের বিকল্প নেই উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও জাতিসংঘের অধীনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে মিয়ানমার নাগরিকদের ফেরত, নাগরিক সুবিধা, পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমেই এর স্থায়ী সমাধান করতে হবে। নিরাপত্তা পরিষদসহ জাতিসংঘ ও বিশে^র সকল দেশ এসময় বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। ভারত, চীন, রাশিয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমার থেকে বিতাড়নের পক্ষে নয় এবং তারা বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে সহযোগিতার কথা বলেছে। তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারের মন্ত্রী এখন বাংলাদেশ সফর করছেন, দু’দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের আলোচনা হবে এবং অং সান সুচি যে তার ভাষণে স্বীকার করেছেন, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চলে আসা এ মানুষেরা মিয়ানমারের নাগরিক, সেটিও আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতারই বিজয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই সংকটের রাজনৈতিক মাত্রা আছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনীতিকে পাশে সরিয়ে রেখে মানবতাকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিয়ে উদ্বাস্তুদের বাঁচিয়ে রেখেছেন। আন্তর্জাতিক সাহায্য না চেয়ে একাই মোকাবেলার চেষ্টা করেছেন। তিনি মনে করে ১৬ কোটি মানুষ খেতে পারলে তারাও খেতে পারবে। উদ্বাস্তু সংকটের সঠিক চিত্র তুলে ধরার জন্য গণমাধ্যমের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, এই সমস্যা তুলে ধরতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম। তাদের সংবাদ দেশবাসী ও বিশ^বাসীর বিবেককে নাড়া দিয়েছে।
প্রতিযোগিতায় বিজেএমই ইউনিভার্সিটি অভ্ ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি প্রতিপক্ষ প্রাইম ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী বিতার্কিকদের হাতে তথ্যমন্ত্রী ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেন। দৈনিক ইত্তেফাকের কূটনৈতিক সম্পাদক মাঈনুল আলম, অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস ও সিনিয়র কূটনৈতিক সাংবাদিক আঙ্গুর নাহার মন্টি বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন।
এর আগে সকালে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমরেড জসিম উদ্দিন ম-লের মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন্ ও শোকবইতে স্বাক্ষর করেন তথ্যমন্ত্রী।