ঢাকার চারপাশে নৌপথের দু’তীরে ২২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে– নৌপরিবহন মন্ত্রী
বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং উচ্ছেদকৃত জায়গা যাতে পুনরায় দখল হয়ে না যায় সে লক্ষ্যে ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে (হাঁটার রাস্তা) নির্মাণ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ঢাকার চারপাশে নৌপথের দু’তীরে ২২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। নদীর সীমানা চিহ্নিত করার লক্ষ্যে ১০ হাজার ৮শ’ ২০টি টেকসই সীমানা পিলার নতুন করে স্থাপন করা হবে। নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান আজ ঢাকায় আশুলিয়া ল্যান্ডিং স্টেশন প্রাঙ্গণে নদীর সীমানা পিলার, ওয়াকওয়ে, ইকোপার্ক এবং জেটি নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, নদী বাংলাদেশের প্রাণ।
নদী হারিয়ে গেলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে না। তিনি নদী রক্ষায়, এর দখল ও দূষণ রোধে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণের পাশাপাশি ৪৪ হাজার ৭৮৩ মিটার ব্যাংক প্রটেকশন, এক হাজার মিটার কি-ওয়াল, ১৯টি আরসিসি স্টেপসহ আরসিসি জেটি, তিনটি ইকোপার্ক এবং ১০ হাজার ৮শ’ ২০টি সীমানা পিলার নির্মাণ করবে। এজন্য ব্যয় হবে ৮শ’ ৪৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। চার বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত।
এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা নদী বন্দরের অন্তর্ভুক্ত রামচন্দ্রপুর থেকে বসিলা পর্যন্ত ৩ দশমিক ৫৫, রায়েরবাজার খাল থেকে কামরাঙ্গীর চর পর্যন্ত ৪ দশমিক ৪৫, হাসনাবাদ-কাওটাইল ৮ দশমিক ৩৫, সদরঘাট- বাবুবাজার ব্রিজ পর্যন্ত এক, ফতুল্লা-ধর্মগঞ্জ ৩ দশমিক ৫০, টঙ্গী নদী বন্দরের আওতায় বাতুলিয়া উজানপুর ৩ দশমিক ৭২৫, পাগার মৌজা-হারবাইদ ৩ দশমিক ০৬৮, আশুলিয়া-কামারপাড়া (ঢাকা প্রান্ত) ৩ দশমিক ৫৬, আশুলিয়া-কামারপাড়া (গাজীপুর প্রান্ত) ৩ দশমিক ৭৫০, নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের আওতায় ডিইপিটিসি এলাকা ২ দশমিক ৫০, নারায়ণগঞ্জ সাইলো হতে কুমুদিনী ৮ দশমিক ৫৫ এবং সুলতানা কামাল- কাঁচপুর সেতু এলাকা পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সর্বমোট ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে।
উল্লেখ্য, ঢাকার চারপাশে ১১০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বৃত্তাকার নৌপথ রয়েছে। উক্ত নৌপথের দু’তীরে মোট ২২০ কিলোমিটার তীরভূমি রয়েছে। বৃত্তাকার নৌপথটি বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদী দ্বারা বেষ্টিত। ইতিপূর্বে ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের অধীনে ২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে এবং ঢাকার শ্যামপুরে ও নারায়ণগঞ্জে দু’টি ইকোপার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর এম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য সাহারা খাতুন, প্রকল্প পরিচালক নুরূল আমিন, আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ আফসারউদ্দিন, তুরাগ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোঃ নাসির ও মোঃ বারেক।