টেকেরহাট-শিবচর নৌপথ খনন কাজ উদ্বোধন করলেন নৌপরিবহণ মন্ত্রী
দেশে এক সময় ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌপথ ছিল। কিন্তু ৭৫ পরবর্তী সরকারগুলোর নদীর প্রতি অবহেলার কারণে তা দাঁড়িয়েছে ৩,৬০০ কিলোমিটারে। বর্তমান সরকার হারানো নদীর পথ পুনরায় উদ্ধারের জন্য কাজ করছে। এজন্য দেশের ৫৩টি নৌপথ খননের জন্য সাড়ে এগার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। নদী খননের জন্য প্রয়োজন ড্রেজার। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে সাতটি ড্রেজার সংগ্রহ করেছিলেন; কিন্তু তাঁকে হত্যার পর কোন সরকার ড্রেজার সংগ্রহ করেনি। আওয়ামী লীগ সরকারের গত মেয়াদে নৌপথ খননের জন্য ১৪টি ড্রেজার সংগ্রহ করা হয়েছে। বর্তমান মেয়াদে ২০টি ড্রেজার সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে।
নৌপরিবহণ মন্ত্রী শাজাহান খান আজ মাদারীপুরের শিবচরে ময়নাকাটা নদীর চর টেকেরহাট-শিবচর নৌপথের ড্রেজিং কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর এম মোজাম্মেল হক।
শিবচর ও চর টেকেরহাটের সাথে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের নৌ-যোগাযোগ রক্ষা করে কার্গো ও নৌ-যান নির্বিঘেœ চলাচলের লক্ষ্যে চর টেকেরহাট-শিবচর নৌ-পথের ময়নাকাটা নদী ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্যতা বৃদ্ধি করে দেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো উক্ত ড্রেজিং কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য।
ময়নাকাটা নদীর তীরে অবস্থিত মাদারীপুর জেলার অন্তর্গত শিবচর উপজেলার শিবচর বাজারটি একটি প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এ নদীর পারে সরকারি কয়েকটি খাদ্য গুদাম রয়েছে যেখানে পূর্বে নৌ-পথে কম খরচে পণ্য ওঠানামা করত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে কোন ড্রেজিং কার্যক্রম গ্রহণ না করায় উক্ত নৌ-রুটটিতে পলি জমে নৌ-চলাচলে অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমান সরকার সারা বাংলাদেশের মৃতপ্রায় নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে নদী খননের বিষয়ে বিশাল কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে চর টেকেরহাট-শিবচর নৌ-রুটটিকে সচল করার লক্ষ্যে নাব্যতার উন্নয়নে দরপত্রের মাধ্যমে বেসরকারি ড্রেজিং প্রতিষ্ঠানের দ্বারা ৮ লাখ ঘনমিটার খনন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এতে ব্যয় হবে ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়াধীন বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘১২টি গুরুত্বপূর্ণ নৌ-পথের খনন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় মাদারীপুর-কবিরাজপুর-চৌধুরীহাট/পেঁয়াজখালী-চরজানাজাত/কাওড়াকান্দি নৌ-পথের চর টেকেরহাট-শিবচর অংশের অন্তর্গত আড়িয়াল খাঁ এবং ময়নাকাটা নদীর চর টেকেরহাট হতে শিবচর পর্যন্ত যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌ-যান নির্বিঘেœ চলাচলের ব্যবস্থাকরণের জন্য প্রয়োজনীয় নাব্যতা আনয়নের নিমিত্ত ড্রেজিং কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
চর টেকেরহাট-শিবচর নৌ-পথের খনন কাজ সম্পন্ন হলে ঢাকার সাথে শিবচরবাসীর নৌ-যোগাযোগ উন্নত হবে এবং সারা বছর নির্বিঘেœ নৌ-পথে মালামাল পরিবহণ করার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। নৌ-পথটি খনন করা হলে পানির সর্বনিম্ন স্তরে অর্থাৎ শুষ্ক মৌসুমে নৌ-পথটিতে ১২০ ফুট প্রশস্ততা ও ১০ ফুট গভীরতা বিদ্যমান থাকবে। সারা বছর ৮ ফুট ড্রাফটের নৌযান নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারবে।