প্রধান মেনু

টঙ্গী থেকে কক্সবাজার ঘুরতে গিয়ে এক কোটি টাকা মুক্তিপন দাবী ॥ একজন নিখোঁজ

মোঃ শাহজালাল দেওয়ান : টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি ঃ টঙ্গী থেকে পাঁচ বন্ধু মিলে কক্সবাজার ঘুরতে গিয়ে আটকিয়ে এক কোটি টাকা মুক্তিপন দাবী করেন কথিত সাংবাদিক ও জ্যোতিষ লুৎফর রহমান। জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ৫ সেপ্টেম্বর টঙ্গীর দেওড়া এলাকা থেকে কথিত সাংবাদিক ও জ্যেতিষ লুৎফর রহমান টঙ্গীর কলেজ গেইট এলাকা থেকে একটি গাড়ী ভাড়া করেন এবং দেওড়া এলাকা থেকে জজ মিয়া, নোমান, ইলিয়াস ও আব্দুল হান্নান বাবুসহ ৫জনকে নিয়ে কক্সবাজার এলাকায় তার শশুড় বাড়িতে বেড়াতে যান। বেড়াতে গিয়ে লুৎফর রহমান কক্সবাজার এলাকার স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সাথে যোগসাজসে তাদের কাছে এক কোটি টাকা মুক্তিপন দাবী করেন এবং তাদেরকে মারধর করেন।

এমতাবস্থায় জজ মিয়া, নোমান, ইলিয়াস গভীর রাতে পালিয়ে আসে। কথিত সাংবাদিক জ্যোতিষ ড্রাইভার মাহমুদুল হাসান ও আব্দুল হান্নান বাবুকে আটকিয়ে রাখে। এদিকে গতকাল সোমবার ড্রাইভারকে ছেড়ে দিলেও বাবুকে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। এব্যাপারে জজ মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কথিত সাংবাদিক ও জ্যোতিষ লুৎফর রহমান টঙ্গীর দেওড়া এলাকায় বসবাস করতেন। অনেকদিন যাবত তার শশুড় বাড়ি কক্সবাজার এলাকায় আমাদেরকে বেড়াতে যেতে বলেন। পরে আমরা গত ৫ সেপ্টেম্বর লুৎফর টঙ্গী কলেজ গেইট এলাকা থেকে একটি গাড়ী এক সপ্তাহের জন্য প্রতিদিন ৩৩শ’ টাকা হারে ভাড়া করে। ওই ভাড়া গাড়ী দিয়ে আমরা কক্সবাজার যাই এবং আবাসিক হোটেল কল্লোল ইন্টারন্যশনালে উঠি। হোটেলে উঠার পর দুইদিন আমাদের ঘুরাফেরা খুব ভালোই চলে।

এমতাবস্থায় লুৎফর কক্সবাজার এলাকার কিছু সংখ্যক মাস্তান ভাড়া করে এবং আমাকে বলে আমি আর টঙ্গী যাবো না। তুই টঙ্গীতে বাড়ি বিক্রি করে এক কোটি টাকা চাঁদা দিতে হবে। এক কোটি টাকা চাঁদা না দিলে তোদেরকে আগামীকাল সকালে পাহাড়ে নিয়ে যাবো। ওই খানে তোদেরকে গুলি করে মেরে ফেলবো এবং আমাদের উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সাথে অনেক ঝগড়া বিবাদ হয়। সুযোগ মত রাতের অন্ধকারে আবাসিক হোটেল কল্লোল এর দারোয়ানকে কিছু টাকা পয়সা দিয়ে আমিসহ নোমান ও ইলিয়াস আমরা পালিয়ে আসি। ড্রাইভার ও আব্দুল হান্না বাবু লুৎফরের সাথে থাকায় তাদেরকে আনতে পারিনি।

এব্যাপারে ড্রাইভার মাহমুদুল হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাকে টঙ্গী কলেজ গেইট এলাকা থেকে লুৎফর ও ইলিয়াস এক সপ্তাহের জন্য কক্সবাজার যাওয়ার জন্য প্রতিদিন ৩৩শ’ টাকা হারে লুৎফর ও ইলিয়াস দুজন মিলে ভাড়া করে। রাস্তার খরচসহ গাড়ির যাবতীয় খরচ তারা গ্রহণ করবে। এমতাবস্থায় আমাকে নিয়ে যাওয়ার পর লুৎফর কক্সবাজার এলাকার কিছু মাস্তান ভাড়া করে এবং তাদের সাথে যোগসাজসে জজ মিয়া, নোমান, ইলিয়াস, আব্দুল হান্নান বাবুর সাথে তুমুল ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে লুৎফর তাদেরকে মারধরও করে। ব্যাপারটি কি নিয়ে তা আমি বোধগম্য নয়। আমাকে ও বাবুকে ফেলে রেখে জজ মিয়া, নোমান ও ইলিয়াস রাতের অন্ধকারে পালিয়ে আসে।

অনেক কাকুতি মিনতি করে আমি আসতে পারলেও বর্তমানে আব্দুল হান্নান বাবু লুৎফরের হেফাজতে আছে। কি অবস্থায় আছে আমি তা জানি না। কিন্তু লুৎফর পরিকল্পিতভাবে তাদেরকে ফুসলিয়ে কক্সবাজারে নিয়েছে আমার ধারণা। লুৎফরের চাল জজ মিয়া, নোমান, ইলিয়াস ও বাবু বুঝতে পারেনি। তারা সরল বিশ্বাসে লুৎফরের ফাঁদে পড়ে কক্সবাজার গিয়েছে। বর্তমানে লুৎফরের ব্যবহৃত মোবাইল-০১৬১৩৩৩০৮৮২ টি বন্ধ রয়েছে। এদিকে আব্দুল হান্নান বাবুর বাবা হাজী মোঃ খবির উদ্দিন মা ও ভাই বোন বাবুর ছবি নিয়ে বিভিন্ন লোকের ধারে ধারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।