জেনেভায় ট্রেড পলিসি রিভিউ সভায় বাংলাদেশের প্রশংসা দেশের জন্য ডব্লিউটিও’র সহযোগিতা চাইলেন বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার পরামর্শ মোতাবেক বাংলাদেশ বিশ্ববাণিজ্য সক্ষমতা অর্জন করেছে। রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলাদেশ সুনামের সাথে এগিয়ে চলছে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল প্রায় ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের রপ্তানি প্রত্যাশার চেয়েও ভালো। বাংলাদেশ বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। বরাবরই বাংলাদেশ বিশ্ববাণিজ্য সংস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে। মন্ত্রী ৩ এপ্রিল জেনেভায় বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার সদর দপ্তরে বাংলাদেশের ৫ম ট্রেড পলিসি রিভিউ-এর প্রথম সভায় বাংলাদেশের বাণিজ্য, শিল্প, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ ও সংস্কারসমূহ তুলে ধরে এসব কথা বলেন। ডব্লিউটিও ট্রেড পলিসি রিভিউ বডির চেয়ারম্যান অ্যাম্বাসাডর টিহাংকি সভায় সভাপতিত্ব করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এলডিসি থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশের প্রথম ধাপ সফল ভাবে অতিক্রম করেছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। তখন বিশ্ববাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উন্নয়নশীল বাংলাদেশের ডব্লিউটিও এর সহযোগিতা প্রয়োজন হবে। বিশেষ করে ট্রিপস চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির সুবিধা বাংলাদেশের প্রয়োজন। ২০৩৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এলডিসিভুক্ত দেশগুলো এ সুবিধা পাবে। ঔষধ শিল্পের জন্য বাংলাদেশ খুবই সম্ভাবনাময়। বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ পেপারলেস ট্রেডে সক্ষমতা অর্জন করেছে এবং ডব্লিউটিও এর পেপারলেস ট্রেড পলিসি চুক্তিতে প্রথম স্বাক্ষরকারী দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা “ভিশন-২০২১” ঘোষণা করেছেন। ২০২১ সালেই আগেই ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হবে এবং ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের উন্নত দেশ।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসছেন। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগে বিশেষ সুযোগ- সুবিধা প্রদান করছে। আগামী ১৫ বছরে এখানে ১০ মিলিয়নের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
অতিরিক্ত রপ্তানি আয় হবে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মুক্ত আলোচনায় সদস্য দেশসমূহ বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন, ২০১২ হতে ২০১৮ পর্যন্ত অব্যাহত ভাবে প্রায় ৮% জিডিপি অর্জন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বিদ্যুৎসহ অবকাঠামো উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়নসহ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ক্ষেত্রে উন্নয়ন এবং অনেক রোহিঙ্গা রিফিউজিদের আশ্রয়দানেরজন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। সভায় বাংলাদেশের আমদানি শুল্ক কমানোসহ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নীতিমালাসমূহ উদারীকরণের জন্যও একাধিক দেশের প্রতিনিধি অনুরোধ জানান।বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাণিজ্য সচিব মোঃ মফিজুল ইসলাম, জেনেভাস্থ বালাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি শামীম এম আহসানসহ ১৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল ট্রেড পলিসি রিভিউ সভায় অংশগ্রহণ করেন।