জাপানে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন
যথাযথ মর্যাদায় ও গুরুত্বসহ নানা আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৪৮তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন করেছে জাপানের টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। আজ দিবসের প্রথমভাগে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীতের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। পরে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তাঁদের আত্মার মাগফিরাত এবং বাংলাদেশের সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়।
এছাড়া জাপানের স্থানীয় পত্রিকায় দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। দুপুরে টোকিওর এক স্থানীয় হোটেলে বাংলাদেশের জাতীয় দিবস উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ড. তোশিকো আবে, জাপান বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লীগের মহাসচিব ও জাপানের ভূমি, অবকাঠামো, যোগাযোগ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী ইচিরো সুকুদা, ডেপুটি চিফ কেবিনেট সেক্রেটারি ইয়াসুতোশি নিশিমুরা, অলিম্পিক ও প্যারা-অলিম্পিক – ২০২০ সংক্রান্ত মন্ত্রী ইয়োশিতাকে সাকুরাদা এবং জাপানের পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী মিনোরু কিউচি।
এছাড়া জাপানের উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, সংসদ সদস্য, জাপানে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, জাপানের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ এবং প্রবাসী বাংলাদেশি প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ভায়োলিনের সুরে জাপান ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। অতিথিদের নিয়ে কেক কেটে রাষ্ট্রদূত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু করেন। রাষ্ট্রদূত তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাপানের সম্রাট আকিহিতো এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি জাপান-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতার জন্য জাপান সরকার ও জনগণের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ধারা ও বাংলাদেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনা উল্লেখ করে জাপানি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে আরো বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহীত ‘রূপকল্প ২০২১’ ও ‘রূপকল্প- ২০৪১’ কে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক উন্নয়ন মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকার নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করছে। জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ড. তোশিকো আবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাপান সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে আন্তরিক মোবারাকবাদ ও শুভেচ্ছা জানান।
তিনি তাঁর বক্তব্যে জাপান -বাংলাদেশের বন্ধুত্বের কথা উল্লেখ করেন এবং রোহিঙ্গা সমস্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনবদ্য ভূমিকা ও নেতৃত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আশা করেন, দু’দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক দিন দিন আরো গভীর হবে। এছাড়া ইচিরো সুকুদা জাপান বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লীগের সভাপতি, উপ প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী তারো আসোর শুভেচ্ছা বাণী পাঠ করে শোনান। আগত অতিথিদের বাংলাদেশি বিভিন্ন রকমের উপহার প্রদান করা হয় এবং বাংলাদেশি খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।