প্রধান মেনু

জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবসে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বাণী

প্রধানমন্ত্রীর বাণী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৮ এপ্রিল জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন: “শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০১৯’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শ্রমজীবী মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শ্রমজীবী মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগ শিল্পায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তাই তাদের জীবনমান ও কর্মক্ষেত্রের উন্নয়ন আবশ্যক।

দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘নিরাপদ কর্মপরিবেশ, টেকসই উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ’- অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি। কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সেইফটি নিশ্চিতকরণে দিবসটি তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং কর্মক্ষেত্রে পরিবেশের উন্নয়ন ঘটিয়ে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সঠিক বার্তা পৌঁছে দিতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। শ্রমিকের অকৃত্রিম বন্ধু, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন শ্রমজীবী, বঞ্চিত ও মেহনতী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন। শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ১৯৭২ সালে শ্রমনীতি প্রণয়ন করেছিলেন।

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সকল কল-কারখানা জাতীয়করণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত যত্নের সাথে সে সময় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় গড়ে তোলেন এবং অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে প্রদান করেন। জাতির পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কর্মক্ষেত্রে শোভন, সুষ্ঠু ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণে এবং শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ২০০৬ ও ২০১৮ সালে দু’বার বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ সংশোধনসহ ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা-২০১৩’ ও ‘বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা-২০১৫’ প্রণয়ন করেছে। শ্রমিকদের চিকিৎসায় ও তাঁদের সন্তানের উচ্চশিক্ষায় এবং কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা কবলিত শ্রমিক পরিবারকে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন থেকে নিয়মিতভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

ভিশন ২০২১ এবং ভিশন ২০৪১ কে সামনে রেখে বর্তমান সরকার মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে নিরাপদ কর্ম পরিবেশ ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। শ্রমজীবী মানুষের জন্য নিরাপদ কর্ম পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে টেকসই শিল্পায়ন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে আমি শিল্প-কারখানার মালিক, বিনিয়োগকারী, ব্যবস্থাপক ও উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানাই। আমরা রাষ্ট্রের বৈশ্বিক, নৈতিক ও আইনি বাধ্যবাধকতার আলোকে নিরাপদ কর্ম পরিবেশ ও শ্রমিকের সুস্থ জীবন নিশ্চিত করে টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলব-ইনশাআল্লাহ। আমি ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০১৯’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

 রাষ্ট্রপতির বাণী: রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ২৮ এপ্রিল জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা সম্পর্কে দেশব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে চতুর্থবারের মতো ‘পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০১৯’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘নিরাপদ কর্মপরিবেশ, টেকসই উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ’ সময়োপযোগী ও যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর তৎকালীন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সকল কলকারখানা জাতীয়করণ করেন। বঙ্গবন্ধুর এ সিদ্ধান্তের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল কলকারখানাগুলোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও শ্রমজীবী মানুষের পেশাগত সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা। কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা প্রতিটি শ্রমিকের আইনগত অধিকার। বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শকে সামনে রেখেই বর্তমান সরকার দেশের সকল শ্রমজীবী মানুষের পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ গড়ে তুলতে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস উদযাপন একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ বলে আমি মনে করি।

আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য আজ বিশ্বব্যাপী বিস্তার লাভ করেছে। শিল্প-কারখানা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তৈরি হয়েছে অসংখ্য নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র। রপ্তানি বাণিজ্যের বাজার ধরে রাখার পাশাপাশি আরো সম্প্রসারণে শ্রমিকদের সুস্বাস্থ্য ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতসহ উৎপাদনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মালিক, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিক সংগঠনগুলোকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে কারখানার মালিক ও শ্রমিকদের মাঝে সীমাবদ্ধ না রেখে জাতীয় সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। আমি শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য এবং নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার, মালিক, শ্রমিকসহ উন্নয়ন অংশীজনকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমি ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০১৯’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”