প্রধান মেনু

জাতির পিতার ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধির অর্ধশতাব্দীর সগৌরব উদযাপন

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির আয়োজনে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালায় দু’দিনব্যাপী আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহচর তোফায়েল আহমেদ। তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, লেখক আলী ইমাম প্রমুখ ইতিহাস, বর্তমান ও ভবিষ্যতের রূপরেখায় জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি ও সমগ্র জীবনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহচর তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘প্রতি বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি যখন ফিরে আসে, স্মৃতির পাতায় অনেক কথা ভেসে ওঠে। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ এ দিনটিকে গভীরভাবে স্মরণ করি। ১৯৬৯-এর ২৩ ফেব্রুয়ারির পর থেকে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সান্নিধ্য পেয়েছি। এবারে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি প্রদানের ৫০ বছর। দেখতে দেখতে অর্ধশত বছর পেরিয়ে গেল। প্রিয় নেতা তাঁর যৌবনের ১৩টি মূল্যবান বছর পাকিস্তানের কারাগারে কাটিয়েছেন। কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বসে যে নেতা প্রিয় মাতৃভূমি বাংলার ছবি হৃদয় দিয়ে এঁকেছেন, ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন, সেই নেতাকে সে দিন জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞচিত্তে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

তিনি শুধু বাঙালি জাতিরই মহান নেতা ছিলেন না, সারা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতা ছিলেন। তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শুধু আমার জীবনে নয়, সমগ্র বাঙালি জাতির জীবনে এক ঐতিহাসিক দিন। কারণ এই দিনটিতে- যে নেতা কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বছরের পর বছর কাটিয়েছেন, বার বার ফাঁসির মঞ্চে গিয়েছেন, সেই প্রিয় নেতাকে আমরা কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞচিত্তে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দিয়েছিলাম। সেই সংবর্ধনা সভায় সভাপতিত্ব করার দুর্লভ সৌভাগ্যের অধিকারী আমি। আজকের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সে দিন ১০ লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ।

সেই জনসমুদ্রের মানুষকে যখন জিজ্ঞাসা করেছিলাম, যে নেতা জীবনের যৌবন কাটিয়েছেন পাকিস্তানের কারাগারে, ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন, সেই প্রিয় নেতাকে কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞচিত্তে একটি উপাধি দিতে চাই। ১০ লাখ মানুষ যখন ২০ লাখ হাত উত্তোলন করেছিল সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। তখনই প্রিয় নেতাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।’ ‘বঙ্গবন্ধু চলে গেছেন। কিন্তু আমাদের জন্য রেখে গেছেন তাঁর গৌরবময় অমর কীর্তি’, বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, ‘বাঙালি জাতিসত্তার পরিচয়ের রূপকারই জাতির পিতা সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি অমর।’ এ সময় তিনি এ সফল আয়োজনের প্রচার উপকমিটিকে ধন্যবাদ জানান।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ তাঁর বক্তৃতায় বলেন, বঙ্গবন্ধুর কাছে বাঙালি জাতির ঋণ শোধ হওয়ার নয়। বঙ্গবন্ধু না হলে স্বাধীনতা অর্জিত হতো না। ১৯৬৬ সালের আওয়ামী লীগ সম্মেলনে তিনি  আমার সোনার বাংলা গানটির সূচনা করেন, যা আজ আমাদের জাতীয় সংগীত। স্বাধীনতা অর্জনের বহু আগে থেকে তিনি স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছেন।’ ‘অসীম দূরদৃষ্টিসম্পন্ন বঙ্গবন্ধুর সুব্যবস্থাপনার কারণেই আজ আমরা সমুদ্রের নিচে আরেক বাংলাদেশ জয় করেছি, ছিটমহলের সবচেয়ে সুন্দর সমাধান পেয়েছি’, বলেন তিনি। ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগ প্রচার উপকমিটির যুগ্ম সম্পাদক আমিন উদ্দিন আমিন প্রমুখ সভায় বক্তব্য রাখেন। দুই দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধুর ওপর ৬০০ আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক আয়োজন আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার অংশগ্রহণে ছিল মুখরিত।