প্রধান মেনু

গাংনীতে সালিসের নামে নারী নির্যাতনের অভিযোগ

উজ্জল : মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার করমদী গ্রামে গ্রাম্য সালিসে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে নির্যাতন করা হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগে গৃহবধু ও তার আপন বোনকে স্বামী সংসার থেকে বিতাড়িত করেছে সালিশপতিরা। গত ২ জুলাই সকালে গ্রাম্য সালিসে দু’জনকে মারধরের সেই ভিডিও এবং ছবি প্রকাশ হলে বিভিন্ন মহলে তোড়পাড় শুরু হয়েছে। ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, গ্রামের আশরাফুল নামের এক যুবকের ডান হাত গৃহবধুর বাম হাতের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঘরের বারান্দা থেকে উঠানে নামানো হচ্ছে। বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষের উপস্থিতিতে তাদের দু’জনকে গ্রামের সড়কে ঘোরানো হয়। এক পর্যায়ে গৃবধুর বাড়ীর পাশে বসানো হয় সালিশ বৈঠক। সেখানে দু’জনের দুই হাত বাঁধা অবস্থায় বসিয়ে রাখা হয়েছে। চারদিকে অসংখ্য উৎসুক মানুষ। সামনের সারিতে বসে আছেন সালিসপতিদের কয়েকজন। ভুক্তভোগী যুবক আশরাফুল ইসলাম বলেন, তাকে জোরপুর্বক মেম্বর আমানুল্লাহ ও বজলুসহ তার লোকজন গ্রামের চায়ের দোকান থেকে জোরপুর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে ওই গৃহবধুর পাশে বসিয়ে রেখে তাকে কয়েক যুবক পাহারা করে। তেঁতুলবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, ৮নং ওয়ার্ড সদস্য আমানুল্লাহ ও করমদি গ্রামের মাতবর বজলুর রহমান বজলু সহ কয়েকজন মাতবর সালিস করেন। দেড় লাখ টাকা জরিমানা আদায়ের পর গৃহবধুকে তালাক দিতে বাধ্য করা হয়। ওই গৃহবধুর স্বামী মালয়েশিয়া প্রবাসী। তার সাত বছর বয়সী এক শিশু সন্তান রয়েছে। আপন দেবরের সঙ্গে তার ছোট বোনের বিয়ে হয়েছিল। সালিসপতিদের সালিসে নেয়া সিদ্ধান্তের কারণে দুই বোন এখন পিতার বাড়িতে অবস্থান করছেন। তাদেরকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। গৃহবধু বলেন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়েছে। এখন আমি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো। তবে সালিসে যারা অবিচার করেছেন তাদের সাজা দাবি করলেও অর্থাভাবে এবং ভয়ে মামলা কিংবা অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছেন না। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ইউপি সদস্য আমানুল্লাহ এড়িয়ে যান। সালিসে দেড় লাখ টাকা আদায় করা হলেও গৃহবধুর পিতাকে দেয়া হয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা। বাকি ১০ হাজার টাকা কোথায় গেল সে প্রশ্নেরও উত্তর মেলেনি। অপরদিকে মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম। গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। তবে খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টির আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।