গাংনীতে নদী পাড়ের মাটি ইটভাটার পেটে
মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী(মেহেরপুর)ঃ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মাথাভাঙ্গা নদী পাড়ের মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। প্রকাশ্য দিবালোকে বাধাহীনভাবে শ্রমিক দিয়ে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব। এলাকার চিহ্নিত কয়েকজন ইটভাটায় ওই মাটি বিক্রি করছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চরগোয়াল গ্রাম ও ভবানীপুরের পাশ দিয়ে জেলার দ্বিতীয় প্রধান নদী মাথাভাঙ্গা প্রবাহিত। ওই নদীর পাশে রামনগর ও চরগোয়ালগ্রামের মাঝে নদী পাড়ের মাটি কাটা হচ্ছে।
চরগোয়াল গ্রামের নাজিম উদ্দীন ও মুন্নাত আলী নদীপাড়ের জমি নিজেদের দাবি করে মাটি বিক্রি করেছে। বেতবাড়ীয়া গ্রামের রুবেল হোসেন, রাজন মিয়া, মামুন হোসেন ও হাড়াভাঙ্গা গ্রামের খোরশেদ আলী শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে। নদী পাড়ের মাটি কিভাবে কাটা হচ্ছে জানতে চাইলে রুবেল হোসেন বলেন, নাজিম উদ্দীন ও মুন্নাত আলীর কাছ থেকে আমরা দেড় লাখ টাকায় মাটি কিনেছি। শ্রমিক দিয়ে কেটে পাওয়ার টিলার ট্রলিতে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করছি।
জানা গেছে, ভবানীপুর ও চরগোয়াল গ্রামের সংযোগ রাস্তা। রাস্তাটি কাঁচা হলেও মাঠের ফসল তোলা ও দুই গ্রামের মানুষের চলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা হিসেবে বিবেচিত। একমাত্র এই রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন চরগোয়ালগ্রামের ছেলেমেয়েরা রামনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যাতায়ত করে। এছাড়াও দুই গ্রামের মানুষের স্বল্প সময়ে যাতায়াতের জন্য এ
রাস্তাটি ব্যবহার করে। এদিকে নদী মাটি সরিয়ে দেওয়ায় রাস্তার পাশাপাশি আশেপাশের আবাদি জমিও ভাঙ্গনের কবলে পড়বে বলে আশংকা করছেন চাষীরা।
ভবানীপুর গ্রামের চাষী আছের আলী বলেন, যেভাবে মাটি কাটা হচ্ছে তাতে ভাঙ্গন অবধারিত। আগামি বর্ষা মৌসূমেই আমাদের আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলিন হবে। রামনগর আরবিজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রী জানায়, নদীর মাটি যেভাবে কাটা হচ্ছে তাতে সবার আগে রাস্তাটি ভেঙ্গে পড়বে। এতে সবচেয়ে বিপাকে পড়বে ছাত্রছাত্রীরা।
প্রকাশ্যে মাটি কাটার বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জানা গেছে, মাটি ও বালু রক্ষা আইন অনুযায়ী নদী কিংবা নদী পাড়ের মাটি কাটা দ-নীয় অপরাধ। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন মাটি কাটার বিরুদ্ধে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর। এ প্রসঙ্গে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষ্ণুপদ পাল বলেন, বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। এই মুর্হূতে সেখানে স্থানীয় ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করব। এরপরেও যদি তারা মাটি কাটে তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।