প্রধান মেনু

খুলনা-গাজীপুরের নিরাপত্তা মডেলেই তিন সিটি ভোট

সদ্য সমাপ্ত খুলনা-গাজীপুর সিটি ভোটের মডেলেই রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের ছক তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। সেইসঙ্গে নির্বাচনকালীন সময়ে ওয়ারেন্ট ছাড়া তিন সিটিতে কাউকে গ্রেফতার না করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিশেষ নির্দেশনা দেবে ইসি।

আজ বৃহস্পতিবার এই তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে বসছে সাংবিধানিক সংস্থাটি। নির্বাচন সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে সংশ্লিষ্টদের বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হবে আজকের বৈঠকে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার, তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা  বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।

এ ছাড়া নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠেয় এ  বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার-ভিডিপি ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেবেন। তবে আজকের বৈঠকে সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়েই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের ছক চূড়ান্ত করবে নির্বাচন কমিশন। মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩০ জুলাই তিন সিটিতে ভোট হবে। গত মঙ্গলবার প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিক  প্রচার শুরু করেছেন প্রার্থীরা। দলীয় প্রতীকে প্রথমবার ভোট হচ্ছে এসব সিটি করপোরেশনে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের এ ভোটে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, সিপিবি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি দল অংশ নিচ্ছে। খুলনা ও গাজীপুরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আসন্ন তিন সিটিতে কোনো ধরনের ভুল-ত্রুটি ও অনিয়মের পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে বিষয়ে বিশেষ নজর রাখা হবে বলে ইতিমধ্যে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেছেন, তিন সিটি এলাকায় ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেফতার না করতে প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। ইসি সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্ম সচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ আহাম্মদ খান বলেন, গত দুই সিটি নির্বাচনের মতোই আগামী তিন সিটির কর্মপরিকল্পনা প্রস্তাব করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, তিন সিটিতে দলীয় প্রতীকে প্রথম সিটি ভোট হওয়ায় এখানে বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে বেশি হারে পুলিশ, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসার, র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হবে। ভোটের আগের দুই দিন থেকে ভোটের পরদিন পর্যন্ত চার দিন (২৮ জুলাই-৩১ জুলাই) ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা যেতে পারে। প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় বলা হয়, তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২২ জন ও গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ২৪ জন নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে মোবাইল ফোর্স এবং প্রতিটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে র‌্যাবের টিম এবং বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হবে।

রাজশাহীতে ১৫ প্লাটুন, বরিশালে ১৫ প্লাটুন ও সিলেটে ১৪ প্লাটুন বিজিবি রাখা হবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে র‌্যাব-পুলিশের টিম ও কয়েক প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে থাকবে। এ ছাড়া প্রচারণার শুরু থেকে প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী হাকিম মাঠে রয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে নামার পর তাদের নেতৃত্বেও থাকবেন নির্বাহী হাকিম। এ সময় তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে বিচারিক হাকিম নিয়োগ করবে ইসি। খুলনা ও গাজীপুর সিটিতেও একই রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছিল ইসি। এ দুই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। দুই জায়গায়ই ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে বিএনপি।