কালিয়াকৈরে সফিপুর-বড়ই বাড়ী আঞ্চলিক সড়কে খানা খন্দে বেহাল দশা যান চলাচলের অযোগ্য
কালিয়াকৈর প্রতিনিধি। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর-বড়ইবাড়ি সড়কসহ অধিকাংশ আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ওই সব সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়তই সড়কের বেহাল দশার কারণে সড়ক দূর্ঘটনায় পড়ে মানুষের প্রাণ হানির মত ঘটনাও ঘটছে। ওই সব সড়ক সংস্কার কাজের জন্য কালিয়াকৈর এলজিইডি ও সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত ও মৌখিক অনুরোধ জানানো হলেও কোন সুরাহা করা হচ্ছে না। ফলে আঞ্চলিক সড়কের অবকাঠামো দিন দিন বেসতে যাচ্ছে। ভুক্তভোগিরা জানান, সরকারের সারা দেশে মহা-সড়কসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়নমুলক কাজের ধারাবাহিকতায় কালিয়াকৈর থেকে নির্বাচিত গাজীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এড.আ.ক.ম মোজাম্মেল হক কালিয়াকৈরের আঞ্চলিক সড়ক, রাস্তাঘাটসহ সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়নের অবদান রেখেছেন।কিন্তু রাস্তাঘাটের উন্নয়ন কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঠিক তদারকি না থাকায় অল্প সময়ের মধ্যে তা পূর্বের অবস্থায় পরিনত হচ্ছে।ফলে উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের সড়ক গুলো দিয়ে যানবাহন চলাচল ও পথচারীদের রাস্তায় বেড়িয়ে খানাখন্দ ও কাঁদা পেরিয়ে যাতায়াত করতে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
বধুবার সফিপুর-বড়ইবাড়ি সড়কে সরেজমিনে গিয়ে একই চিত্র দেখা গেছে।গত বছর কালিয়াকৈর উপজেলা এলজিইডি কর্তৃপক্ষ সড়কটি নির্মাণ কাজ তদারকি করলেও বছর দেড়েকের মধ্যে অধিকাংশ স্থান ভেঙ্গে পূর্বের অবস্থায় ফিরেছে। এতে যানবাহন চালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ওই সড়কের এ বেহাল দশার কারণ উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলীদের দায়ি করেছেন ওই রোডে চলাচল কারী সাধারন মানুষ। সফিপুর- বড়ইবাড়ি সড়কের দুই পাশ দিয়ে সিনাবহ বাজার পর্যন্ত গড়ে উঠেছে বেশকিছু শিল্প-কারখানা।এ রাস্তায় সব সময় কারখানার কভার ভ্যান,লরিসহ ভারী যানবাহন চলাচল করে। এলাবাসী, ভুক্তভোগি ও উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়,উপজেলার সফিপুর বাজার থেকে- বড়ই বাড়ী আঞ্চলিক সড়কের অধিকাংশ স্থানেই যেন খানা খন্দের সৃষ্টি হয়ে পানি জমে রয়েছে। ওই সড়কের বোর্ডমিল,পাশা গেট এলাকায় দুই থেকে তিন ফুট গর্তের সৃষ্টি হয়ে পানি জমে রয়েছে। ওই এলাকার আবুল কাশেম জানান, সড়ক নির্মাণের সময় উপজেলা এলজিইডি অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন রাস্তার কাজে নির্মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে থাকে। আর এতে সড়কটি ছয় মাসের মধ্যে ভেঙ্গে বেহাল দশায় পরিণত হয়। কালিয়াকৈর- ফুলবাড়িয়া সড়কের মেদিয়াশোলাই সহ ফুলবাড়িয়া বাজারের পূর্ব পাশে শিমলা পাড়া সলিম মোড় এলাকার কয়েকটি স্থানে যেন সড়কটি একটি পুকুরে পরিণত হয়েছে।
নির্মাণ সামগ্রী নির্মানের থাকায় কার্পেটিং উঠে গিয়ে খানা খন্দের সৃষ্টি হচ্ছে। এসড়কটি দিয়ে শতাধিক তৈরি পোশাক কারখানার যানবাহন ও শ্রমিকদের চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। একই সড়কের বড় কাঞ্চন পুর, বাংলাবাজার, জাথালিয়া ফরেষ্ট অফিসের সামনে,সালদা পাড়া মালেক কুড়িচালাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক স্থানে ছোট বড় খানা খন্দের সৃষ্টি হয়ে পুরোপুরি যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সিএনজি চালক পলাশ ও ফুলবাড়িয়া বাজারের ব্যবসায়ী আঃ করিম রহমান জানান, ফুলবাড়িয়া বাজার থেকে কালিয়াকৈর বাজারে যাওয়ার পথে কোন যানবাহনে রোগী,গর্ভবতি নারী নিয়ে গেলে পথেই যেন সন্তান প্রসব করার উপক্রম হয়ে পড়ে। অপর দিকে মাওনা বাজারের দিকে যাওয়ার পথে কয়েকটি স্থানে নেমে কাঁদা আর গর্তের মধ্য দিয়ে যাত্রীদের গাড়ী থেকে নেমে গাড়ী ঠেলতে হয়। এতে যাত্রী ও চালকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাস্তার এ বেহাল অবস্থা দেখার যেন কেউ নেই। অপর দিকে জালশুকা-বাড়ইপাড়া সড়কে বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন যাবত খানা খন্দ তৈরি হয়ে এখন যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
দীর্ঘদিন ওই সড়কটি সংস্কার কাজ না করায় ওই এলাকার ২৫টি গ্রামের মানুষ কারখানার শ্রমিক স্কুল/কলেজের ছাত্র/ছাত্রীসহ সকলকে এখন বাধ্য হয়ে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এলাকাবাসী ও ওই রোডে চলাচল কারী যানবাহনের চালকেরা জানান, এ সড়কটি দিয়ে প্রতিনিয়ত উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নের অন্তত প্রায় ২৫টি গ্রামের মানুষসহ পার্শ্ববতী ধামরাই উপজেলার যাদবপুর,শিমুলিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। এছাড়া চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের যানজট এড়াতে এ সড়কটি প্রায়ই বাইপাস সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত করছে উত্তরবঙ্গের হাজারো যানবাহনের চালকরা। সড়কের পাশদিয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পানি নিস্কাসনের জন্য কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। ফলে সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয় ছোট-বড় অসংখ্য গর্তসহ খানা-খন্দের।
সৃষ্টি হওয়া সড়ক দিয়ে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় এলাকাবাসিসহ পোষাক কারখানার শ্রমিক,পরিবহন শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের। পশ্চিম খোলাপাড়া সমনআলী সুপার মার্কেটের তরুণ ব্যবসায়ী রমজান আলী ও মিজানুর রহমান জানান, সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে খুবই সমস্যা হচ্ছে।মালামাল আনা- নেয়ায় পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি এছাড়াও মালামাল পরিবহনে ভাড়া গুনতে হচ্ছে দিগুন। কালিয়াকৈর- ধামরাই সড়কে বলিয়াদি থেকে ডোবাইল পর্যন্ত সড়কের করুণ দশা সৃষ্টি হয়েছে। ওই সড়ক দিয়ে কালিয়াকৈর ও ধামরাই এলাকার শত শত যানবাহন চলাচল করলেও সড়কটি খানাখন্দের কারণে সড়কটি অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। কালিয়াকৈর উপজেলা এলজিইডি অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী সরকার মোহাম্মদ সাজ্জাদ কবীর জানান, কালিয়াকৈর-ফুলবাড়িয়া সড়কটি আমাদের তত্বাবধানে নয় এটা সড়ক ও জনপদের। সফিপুর-বড়ইবাড়িসহ আঞ্চলিক সড়কগুলো আমাদের এলজিইডির।ওই সব সড়কগুলো সংস্কার কাজের জন্য বরাদ্ধ চাওয়া হয়েছে।