কালিয়াকৈরে লাভবান টার্কির খামারীরা
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নের গোসাত্রা গ্রামের হান্নান মোল্লা টার্কির খামার করে লাভবান। ক্ষতি গ্রস্থ পল্ট্রি খামারী হান্নান মোল্লা, এখন টার্কি পালন করে প্রথম বছরেই লাভবান। হান্নান মোল্লার টার্কি পালন দেখে উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে টার্কির খামার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নের গোসাত্রা গ্রামে হান্নান মোল্লা তার নিজ বাড়ীতে ও বাড়ীর পাশে পুরাতন পল্ট্রি খামারে শেটে টার্কি পালন করছে। টার্কি পালনের জন্য উপযুক্ত ৩ টি সেট রয়েছে। তার খামারে বিভিন্ন বয়সের কয়েক ধাপের প্রায় ১ হাজার টার্কি রয়েছে। একেকটি টার্কির ওজন প্রায় ২ থেকে ৫ কেজি হবে।
আর খামারী টার্কিকে বাড়ীর আশে পাশে থেকে সবুজ শাক-সবজী এনে খাওয়ান। টার্কি খামারী হান্নান মোল্লাহ জানান, আমি পল্ট্রি মুরগী দিয়ে খামার শুরু করি। প্রথম কয়েক বছর ভালই লাভবান হয়েছি। পরে আস্তে আস্তে পল্ট্রি খামারে ক্ষতি হতে থাকে। পল্ট্রি খামার করে আমার প্রায় ১২ লক্ষ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। এই জন্য পল্ট্রি খামার বাদ দিয়ে প্রথমে আমি ৫০ টি টার্কির বাচ্চা দিয়ে খামার শুরু করি। বর্তমানে আমার খামারে কয়েক ধাপের ১ হাজার টার্কি রয়েছে। ২ মাস বয়স থেকে ৫ মাসের টার্কি রয়েছে। ৭ মাস বয়সে টার্কির ওজন প্রায় ৬-৭ কেজি পর্যন্ত হয়। আর এই ওজনের টার্কি বিক্রি করার উপযোক্ত সময়।
টার্কি পালনে খরচও কম। ১ মাস বয়সের একটি টার্কির বাচ্চার দাম ৬০০ টাকা। খাবার হিসেবে পল্ট্রি ফিট আর সবুজ শাক-সবজী। ঔষধও তেমন লাগে না। একটি টার্কি বিক্রি পর্যন্ত মোট খরচ হয় ১৬০০-১৮০০ টাকা পর্যন্ত। আর মোরগ টার্কি বিক্রি হয় প্রায় ৩ হাজার টাকা ও মুরগী টার্কি বিক্রি হয় প্রায় ৪ হাজার টাকা। এই টার্কি প্রায় টানা ৭ মাস ডিম দেয়। ১ টি ডিমের দাম প্রায় ১০০ টাকার উপরে। এই টার্কি বিক্রি করে এখন প্রায় ১৫০০-২০০০ টাকা পর্যন্ত লাভ হচ্ছে। আবার কিছু টার্কি রেখে দেয় ডিম সংগ্রহ করে বাচ্চা ফুটানোর জন্য। এখন প্রতিদিন অনেকেই আসে আমার টার্কির খামার দেখতে।
আবার অনেকেই আমার খামার থেকে বাচ্চা কিনে নিয়ে যায় পালন করার জন্য। তিনি আরও বলেন, সরকার যদি টার্কি পালনের জন্য সহজে ঋনের ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে আমার মতো অনেক খামারী পল্ট্রি খামারের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে। কালিয়াকৈর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান ইসলাম খান জানান, উপজেলায় টার্কির খামার বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে খামারীদের কাছে। টার্কির চাহিদাও ভাল। পল্ট্রি মুরগীর মতো তেমন কোন রোগ বালাই নেই। এ টার্কি পালনে অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায়। চাহিদা ভাল থাকা ও দাম ভাল পাওয়ায় ছোট বড় বেশ কয়েকটি খামার গড়ে ওঠেছে।