একনেক সভায় ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় ৭ হাজার ৮ শত ৯০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৭টি নতুন ও সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে জিওবি ৩ হাজার ৮ শত ৭৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৪ হাজার ১৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
আজ ঢাকায় শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। একনেক সদস্যবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীগণ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং সংশ্লিষ্ট সিনিয়র সচিব ও সচিববৃন্দ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী একনেক সভা শেষে সভার বিস্তারিত সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহরে পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাট ও ডরমিটরি ভবন নির্মাণ শীর্ষক একটি প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য পর্যায়ক্রমে শতভাগ আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে এবং সরকারি পরিত্যক্ত সম্পত্তি যাতে বেদখল না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া দেশের সকল জেলা রেজিস্ট্রি ও সাবরেজিস্ট্রি অফিস বিদ্যমান নকশা ঠিক রেখে পর্যায়ক্রমে নির্মাণ করার পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আরো বলেন, ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, খুলনা, রংপুর ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিদ্যমান ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং আরো ৯টি (গোপালগঞ্জ, কক্সবাজার, বগুড়া, পাবনা, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, যশোর, নোয়াখালী) মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার স্থাপন; চলমান ৬টি ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেলের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং আরো ৭টি (ঠাকুরগাঁও, ভোলা, মানিকগঞ্জ, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, মৌলভীবাজার) জেলা সদর হাসপাতালে নতুন ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেল প্রতিষ্ঠা; ঢাকা মেডিকেল কলেজে বিদ্যমান ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরি, ৭টি বিভাগীয় মেডিকেল কলেজে বিদ্যমান রিজিওনাল ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরির কার্যক্রম অব্যহত রাখা এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিজিওনাল ডিএনই স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরি স্থাপন; মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ভবনে বিদ্যমান ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টারের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং ৯টি (ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ) মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন রিজিওনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার স্থাপন; মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ভবনে বিদ্যমান ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টারের কার্যক্রম শক্তিশালী করা; ন্যাশনাল সেন্টার অন জেন্ডার বেইজড ভায়োলেন্স এর কার্যক্রম পরিচালনা করা; জেন্ডার বেইজড ভায়োলেন্স বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা; জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, মনিটরিং, কস্টিং ও রিভিউ করার লক্ষ্যে ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম (৪র্থ পর্ব ) প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন লাভ করেছে।
একনেক সভায় অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ হচ্ছে ‘শাহজালাল ফার্টিলাইজার প্রকল্প (এসএফপি) (২য় সংশোধিত) প্রকল্প। এ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৪ হাজার ৯৮৪ দশমিক ৯৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে জিওবি ৯৯৮ দশমিক ৮৯ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৩ হাজার ৯৮৬ দশমিক ০৮ কোটি টাকা। ‘চট্টগ্রাম শহরে পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাট ও ডরমিটরি ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প। এ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৭৬ দশমিক ৬১ কোটি টাকা। এর পুরোটাই জিওবি। ‘দেশের বিভিন্ন জেলায় জেলায় জেলা রেজিস্ট্রি ও সাব রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প। এ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৩০৯ দশমিক ৩৩ কোটি টাকা। এর পুরোটাই জিওবি। ‘আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প। এ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। এর পুরোটাই জিওবি। ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম (৪র্থ পর্ব)’ প্রকল্প। এ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ১১৫ দশমিক ০৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জিওবি ৮৭ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ২৭ দশমিক ৬০ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলায় হালদা নদীর উভয় তীরের ভাঙন হতে বিভিন্ন এলাকা রক্ষাকল্পে তীর সংরক্ষণ কাজ’ প্রকল্প। এ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ২১২ দশমিক ০৮ কোটি টাকা। এর পুরোটাই জিওবি। ‘গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (রাজশাহী জোন)’ প্রকল্প। এ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৩৮ দশমিক ৯৪ কোটি টাকা। এর পুরোটাই জিওবি।