ইসলামপুরে মধু সংগ্রহ চলছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃজামালপুরঃ ইসলামপুরে চলতি সরিষা মৌসুমে সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ চলছে। ধারনা করা হচ্ছে এবছর কোটি টাকার মূল্যের মধু সংগ্রহের আশা ব্যক্ত মৌরায়ালদের। যা গত বছরের চেয়ে তিন গুণ বলে জানা গেছে। মৌ চাষী কাজী মনজুর হোসেন জানান, ১শটি মৌ বাক্সে ১৫ দিনে ২৫ মন মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। যা চার লাখ টাকা বিক্রি করা যাবে। তিনি বলেন, বিসিকের আর্থিক সহায়তা ও স্থানীয় কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় আমরা এখানে ভালো ভাবে কাজ করেছি। মৌ চাষী সেলিম খান পিন্টু জানান, বিসিকের সহযোগিতায় এ এলাকায় মধু সংগ্রহ করতে এসে স্থানীয়দের ব্যাপক সহযোগিতা পেয়েছি। তার দলে মৌমাছির ১শ ১০টি বাক্স আছে। প্রতিটি বাক্সে একটি করে রাণী মৌমাছি রয়েছে। রাণী মৌমাছির নির্দেশে এখানের মাছিরা সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত তিন কিলোমিটারের মধ্যে মধু আহরণ করতে থাকে।
এখানে সরিষার ফুল শেষ হয়ে যাওয়ায় অন্যত্র চলে যাব। মৌ চাষী কানু মং জানান, বিসিক অট্রেলিয়া থেকে এসব মৌমাছি আমদানী করে আমাদের কারিগরী ও আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, দেশে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চাষী সৃষ্টি না হওয়ায় প্রতি বছর শুধু সরিষার ফুল থেকেই কোটি কোটি টাকার প্রাকৃতিক ও খাটী মধু শুকিয়ে যায়। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, ইসলামপুরের চলতি রবি মৌসুমে ৩ হাজার ১শ ২০টি মৌ বাক্সের সরিষার ফুল থেকে ১ কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। গত বছরের মধু সংগ্রহের পরিমান ছিল ৩৫ লাখ টাকা। এতে সরিষার ফলনও ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে জানা গেছে। চলতি মওসুমে ইসলামপুর উপজেলায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এসব সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌ চাষীদের ৩০টি দল ৩ হাজার ১শ ২০টি মৌ বাক্সে ২৫ হাজার কেজি মধু সংগ্রহ করেছে।
যার বর্তমান বাজার মূল্য ১ কোটি টাকার বেশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মতিয়ার রহমান জানান, এ বছর দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ৩০টি মৌ চাষীর দল এসেছিলো। উপজেলার কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাদের সকল প্রকার সহযোগিতা করা হয়েছে। মৌ চাষীদের তথ্যানুযায়ী এ বছর ইসলামপুরের সরিষার ফুল থেকে ২৫ হাজার কেজি মধু সংগ্রহ হয়েছে। যার বর্তমান বাহার মূল্য ১ কোটি টাকা বলে জানা গেছে। তিনি বলেন, এ উপজেলায় যে পরিমান সরিষার চাষ হয় তা থেকে প্রতি বছর ৫ কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করা সম্ভব। এ ছাড়া সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌ চাষ হলে ফুলের পর্যাপ্ত পরাগায়ন ঘটায় সরিষার ফলন ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।