প্রধান মেনু

আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি ড. ইউনূসের ওপর ভর করেছে—-তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী

ঢাকা, ২২ ভাদ্র (৬ সেপ্টেম্বর) : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেছেন, আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি ড. ইউনূসের ওপর ভর করেছে, তার ইস্যুতে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এভাবে আশ্রয় নিয়ে যারা খুনের রাজনীতি করে, মানুষ পোড়ানোর রাজনীতি করে, ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করে, খুনের ওপরে যাদের জন্ম, রক্তের ওপরে যাদের রাজনীতি, তাদের দিয়ে দেশের অগ্রগতি হয় না।’

আজ রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জেবউননেছার গবেষণাগ্রন্থ ‘বেদনাতুর ১৯৭৫ আগস্টের শহিদদের আলেখ্য’র মোড়ক উম্মোচনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।

সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘ড. ইউনূসের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, নোবেল বিজয়ী হোন, রাষ্ট্রপতি হোন, প্রধানমন্ত্রী হোন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যেভাবেই হোক হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ ৯ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। তার বিচার হয়েছে, তিনি জেলও খেটেছেন। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া, তিনিও শাস্তিভোগ করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার হচ্ছে। বহু নোবেলজয়ীর বিচার হয়েছে, জেলখানাতেও গেছে। আর ড. ইউনূস সাহেব নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন বলে তার কি শ্রমিকের পাওনা বুঝিয়ে দেওয়া মওকুফ!’

মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘এ জাতির দুর্ভাগ্য যে, যারা রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল, তারা রাজনৈতিক দল গঠন করে এবং দেশে কিছু ভোটও পায়। ১৯৭০ সালেও আওয়ামী লীগের বিপক্ষে কিছু ভোট পড়েছিল। তাদের প্রজন্ম তো রয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান সমস্ত স্বাধীনতাবিরোধী এবং প্রতিক্রিয়াশীলদের একত্রিত করে দল গঠন করেছিলেন। আজকে সেইদল বড় বড় কথা বলে, রাত-বিরাতে বিদেশি দূতাবাসে ধরনা দেয়। কিন্তু ধরনায় লাভ হয়নি কারণ কেউ তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার সমর্থন করেনি।’

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশ ও সরকারের ভাবমূর্তি নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১০ তারিখে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাখোঁ আসছেন। আবার রাশান পররাষ্ট্র মন্ত্রীও ছুটে আসছেন আগামীকাল। এতেই প্রমাণিত হয়, বিশ্বসম্প্রদায় আমাদের সাথে আছে।’

হাছান বলেন, ‘আবার আগামী ৯ তারিখে ভারতের নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়া থেকে শুধু বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে শিল্পায়নে বিশ্বশীর্ষ ২০ দেশের বর্তমান চেয়ার ভারত। এ থেকেও প্রমাণিত হয়, ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্কটি কোন উচ্চতায়।’

১৯৭১ ও ১৯৭৫ সালের দিকে দৃকপাত করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান এ সময় বলেন, শত্রুর মুখোমুখি গর্জে ওঠা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান মৃত্যুকে হাতের মুঠোয় নিয়ে রাজনীতি করেছেন, দেশকে স্বাধীন করেছেন। আর বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সবচেয়ে বড় কুশীলব ছিলেন খন্দকার মোশতাক ও জিয়াউর রহমান।

হত্যকারীদের বিচার হয়েছে, কিন্তু সাংবাদিক মহলসহ বহু সংগঠন ও মানুষের দাবিকৃত একটি স্বাধীন কমিশনের মাধ্যমে সকল কুশীলব ও দায়িত্বে ব্যর্থদের বিচার হলেই আগামী প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনাকারীদের চিনতে পারবে, ইতিহাসটি জানবে, বলেন মন্ত্রী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দীকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সুলতানা নাদিরা এমপি, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম, এমেরিটাস অধ্যাপক শিল্পী হাশেম খান, শহীদ কর্ণেল জামিল তনয়া আফরোজা জামিল, শহিদ শেখ রাসেলের সহপাঠী অধ্যপক গীতাঞ্জলি বড়ুয়া, নাট্যজন ম হামিদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মাহফুজা খানম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সাংবাদিক ইহিতা জলিলের সঞ্চালনায় উপমা পালের গাওয়া দেশাত্মবোধক গানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূত্রপাত ও সমাপ্তি ঘটে।