আগামী ৬ দিন (সোমবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ধর্মঘট) ঢাকা মহানগরীতে মাংসের দোকান বন্ধ থাকবে

প্রিয় দেশবাসী,
আসসালামু আলাইকুম। আপনাদের সদয় অবগতির জন্য অত্যন্ত দুঃখের সাথে ঘোষণা করতে হচ্ছে, আমাদের প্রিয় ও জীবিকা অর্জণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। আপনাদের অসুবিধার জন্য দুঃখিত। উল্লেখ্য যে, বিগত আট মাস যাবৎ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কাছে গাবতলি গরু হাটের ইজারাদারের অত্যাচার, সরকারের আদেশ অমান্য করে অতিরিক্ত খাজনা আদায়, তার বাহিনী দিয়ে মাংস ব্যবসায়ীদের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে। সীমান্ত থেকে গাবতলি গরুর হাট পর্যন্ত ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা গরু প্রতি চাঁদাবাজি হচ্ছে, তা বন্ধ করার দাবী উঠেছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে শত শত আবেদন করা হয়েছে, চাঁদাবাজির ফিরিস্তি দেওয়া হয়েছে। আপনাদের মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলন, মানব বন্ধন, প্রেস বিজ্ঞপ্তি, একাধিক টিভি মিডিয়ায় চাঁদাবাজির সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, এসবি ও র্যাব-৪ তদন্ত করছে, একাধিক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে – এত সব কিছুর পরেও বিগত ২৮/৯/২০১৬ ইং তারিখে মেয়র আনিসুল হকের নির্দেশে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে, কিন্তু কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভার কাজ স্থগিত থাকে এবং রহস্যজনকভাবে সাড়ে তিন মাস পরে ১৮/১/২০১৭ ইং তারিখে রেজুলেশন দেন, মাংস ব্যবসায়ী সমিতির আবেদন বিবেচনায় না নিয়ে ১২ দফা সুনির্দিষ্ট চাঁদাবাজির উদাহরন থাকা সত্বেও কোন তদন্ত করেন নাই, অভিযোগকারীদের মতামত নেওয়া হয় নাই, প্রশাসনের তদন্ত রিপোর্ট নেওয়া হয় নাই, ২০১৪ সালের মাংস ব্যবসায়ীদের সাথে কর্পোরেশনের অঙ্গিকার বাস্তবায়ন করা হয় নাই। ইজারাদারকে প্রতিপক্ষ করে জনস্বার্থ আমলে না নিয়ে একটি রেজুলেশন দেওয়া হয়, ইজারার মেয়াদ একবছর হলেও বিচার না করে ইজারাদারকে কোটি কোটি টাকা লুটে নেওয়ার জন্য সুযোগ করে দেওয়া হয়। মাননীয় মেয়র জনাব আনিসুল হক মাংস ব্যবসায়ীদের সমস্যা একাধিকবার সমাধানের নির্দেশ দিলেও দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তারা নানা ধরনের তালবাহানা করেছেন ইজারার শর্ত বাস্তবায়নে। তাদের ভাবখানা এমন যে কর্পোরেশনের যেন কিছুই করার নেই। আজ প্রশ্ন উঠেছে এগুলো হচ্ছে কিসের বিনিময়ে। এদিকে মাংসের মূল্য দিন দিন বেড়েই চলেছে, মাংস ব্যবসায়ীরা নিরুপায় হয়ে আপনাদের গলা কেটে টাকা আদায় করছে। ইতিমধ্যে গরুর মাংসের কেজি ৫০০/- টাকা এবং খাসির মাংস ৮৫০/- টাকায় বিক্রয় করেও নিঃস্ব হচ্ছে।
প্রিয় দেশবাসী, আমাদের প্রধানমন্ত্রী জনসাধারণ যাতে একটু কম দামে মাংস কিনতে পারে সেকথা বিবেচনা করে মাংস ব্যবসায়ীদের জন্য খাজনা নির্ধারন করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্য্যালয়ের নির্দেশ কর্মকর্তারা অমান্য করার সাহস দেখালে সেই সময়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বদলী করা হয়। সরকারের এতো অর্জণ এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের দুই মেয়রের অক্লান্ত শ্রম ও উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রশ্নবৃদ্ধ করতে কিছু দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তা গোপন পরিকল্পনা করছেন বলে মনে করছি। কিসের বিনিময়ে একজন ইজারাদারের বিরুদ্ধে শত শত অভিযোগ আমলে নেওয়া হচ্ছে না তা আজ আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে চাই। ইতিমধ্যে মহামান্য হাইকোর্টে রীট আবেদন করা হয়েছে ইজারার শর্ত অমান্য করায়। আইনের নানা ধরনের জটিলতায় সময় ক্ষেপন এবং এই সুযোগে ইজারাদারের অত্যাচার বেড়ে যাওয়ায় আমাদেরকে ধর্মঘট ছাড়া বিকল্প কর্মসূচী না থাকায় মাংসের দোকান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হলাম।
বিশেষ দ্রষ্টব্য ঃ
মাংস ব্যবসায়ী আজ জাতীয় রপ্তানীতে অবদান রাখছে শুধু মাংস খাওয়ার জন্য নয়। ২০০ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জণ করছে পশুর বর্জ্য রপ্তানী করে। ৬ থেকে ৭ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জণ করছে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানীর মাধ্যমে। ঔষধ শিল্পে অনেক ঔষধ তৈরী করা হয় পশুর বর্জ্যরে মাধ্যমে। তবুও আমরা মাংস ব্যবসায়ীরা অবহেলিত এবং প্রতিহিংসার শিকার। বিচার চাই, বাঁচার মত বাঁচতে চাই, ন্যায়সঙ্গত অধিকার চাই, আপনাদের সহযোগিতা চাই।
« আওয়ামীলীগের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত (পূর্বের খবর)