আগামী অক্টোবরে তিনটি বিল আইন হিসেবে পাসে ভূমিমন্ত্রীর আশা প্রকাশ
ঢাকা, ১৮ ভাদ্র (২ সেপ্টেম্বর) : ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী আশা প্রকাশ করেছেন যে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ সহ মোট তিনটি ভূমি বিষয়ক আইনের খসড়া আগামী ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ সংসদে বিল আকারে জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা সম্ভব হবে। অপর দুটি আইনের খসড়া হচ্ছে, ‘ভূমি সংস্কার আইন, ২০২৩’ এবং ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন, ২০২৩’।
আজ ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর উদ্যোগে রাজধানীতে অবস্থিত ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘ঢাকার বিকেন্দ্রীকরণ এবং বাংলাদেশে টেকসই নগরায়ন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী এই আশা প্রকাশ করেন।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এসময় আরও আশা প্রকাশ করেন যে, প্রযোজ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন সহ তিনটি বিলই আইন হিসেবে সংসদে পাস করা সম্ভব হবে।
ভূমিমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে আরো বলেন, সম্প্রতি শুরু হওয়া বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে সম্পন্ন হলে পূর্বের জরিপে হওয়া অনেক সমস্যা দূর করা সম্ভব হবে। মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনার ফলে সীমা বহির্ভুত অতিরিক্ত জমির মালিক হওয়ার সুযোগ এখন আর নেই। তিনি এই সময় বলেন, আমরা চাই ঘরে বসেই মানুষ যেন ভূমিসেবা গ্রহণ করতে পারেন, একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যেন কারো ভূমি অফিসে না যেতে হয়। যত ‘হিউম্যান টু হিউম্যান কানেকশন’ কম হবে, সেবা গ্রহণ তত ভালো হবে বলে মন্ত্রী মনে করেন।
অনুষ্ঠানে আলোচকবৃন্দ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, পরিবেশ সংরক্ষণে, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি জমি সুরক্ষা, সারা দেশে সুবিন্যস্ত নগরায়ন, রাজধানী ঢাকার ওপর চাপ কমানোর কৌশল ও ক্ষেত্রসমূহ নিয়ে আলোচনা করেন।
সরকারি পরিষেবা সংস্থাগুলোতে বেসরকারি অংশীজন থেকে প্রতিনিধি থাকার বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী একমত পোষণ করে বলেন যে, এতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কাজের সুবিধা হতে পারে। আইনি দিক অনুসরণ পুর্বক করে প্রতিনিধির বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। মন্ত্রী আরও জানান তিন ফসলি কৃষিজমি সুরক্ষায় সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। এই সময় ভূমিমন্ত্রী গণমাধ্যম এবং সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থা ও সংগঠনকে দায়িত্বশীল ‘ওয়াচডগ’-এর (নজরদারির) ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী মোঃ ওয়াসিম উদ্দিন এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক ও স্থপতি ইকবাল হাবিব সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেমিনারটি সভাপতিত্ব করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার সামির সাত্তার।
সেমিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত স্থাপত্য অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসির, রিহ্যাবের সহসভাপতি প্রকৌশলী মুহাম্মদ সোহেল রানা, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন এবং নতুনধরা এসেটস্ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাদী-উজ-জামান।