আগস্ট মাস আমাদের শোক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে—-নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
বিরল (দিনাজপুর), ৩ ভাদ্র (১৮ আগস্ট): নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আগস্ট মাস শোকের মাস। বাঙালি জাতির দুঃখ-কষ্ট ও বেদনার মাস। এই মাস আসলে আমরা শোকে কাতর হয়ে যাই। এ মাস আসলে আমাদের শরীরের রক্ত ফিনকি দিয়ে ওঠে। এ মাস আসলে আমাদের মনে হয় লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে। আমরা মুজিব হত্যার বিচার করেছি। মুজিব হত্যার বদলা নিতে পারি নাই। আমরা সেই সংগ্রামে আছি। আমরা হত্যার পরিবর্তে হত্যায় বিশ্বাসী না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আওয়ামী লীগের অনেক নেতা কর্মী বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চেয়ে জীবন দিয়েছে, অত্যাচারিত হয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে । আমাদের ঘরছাড়া করা হয়েছে, বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে, আমাদের জীবন যৌবন কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা আপোষ করে নাই। আমরা ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর থেকে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চেয়ে আসছি। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ারা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করে নাই বরং বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার যাতে না হয় সেজন্য ইনডেমনিটি এক্ট তৈরি করে বিচারের পথ বন্ধ করে দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এরকম অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা লড়াই করেছি, সংগ্রাম করেছি। আমাদের আস্থা ছিল বাংলার মানুষের ওপর, বাংলার জনগণের ওপরে। বাংলার মানুষ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে কিন্তু সেই আস্তা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমান, ৮৬ সালে এরশাদ, ৯১ সালে এবং ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রের ভোটের মাধ্যমে।
প্রতিমন্ত্রী আজ দিনাজপুরের বিরলের বিজোড়া ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিজোড়া ইউনিয়ন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগস্ট মাস আমাদের শোক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে শেখ হাসিনার উপর হামলা করা হয়েছে। তারেক জিয়ার নির্দেশে, খালেদা নিজামী সরকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশে সেদিন শান্তি সমাবেশে হামলা করা হয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী হতাহত হয়েছে। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট আগস্ট মাসে সারাদেশে ৬৩টি জেলায় ৫০০ জায়গায় একযোগে বোমা হামলা করে ভীতসন্ত্রস্ত পরিবেশে সৃষ্টি করা হয়েছিল। যাতে কেউ প্রতিবাদ করতে না পারে। খালেদা নিজামীর দুঃশাসনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ২৬০০০ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। এই মহান সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তাকে প্রায় ২১ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তাকে দমানো যায়নি। কারণ তার ধমনীতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত। এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য বাবার মত রক্ত দিতে তিনি প্রস্তুত। এত বড় শোক, এত বড় দুঃখ কষ্ট নিয়েও এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তিনি কাজ করে চলেছেন। এ বাংলাদেশকে তুলে ধরার জন্য লড়াই করছেন, সংগ্রাম করছেন। তাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বাংলার মানুষের জন্য এত উন্নয়ন বিএনপির সহ্য হয়না, তাদের কষ্ট হয়। খালেদা জিয়া, তারেক রহমান রংপুরের মানুষকে মফিজ বলে অপমান করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রংপুরসহ সারাদেশের উন্নয়ন হয়েছে। রংপুরে আর মফিজ নাই। রংপুরের মানুষ বিএনপিকে মফিজ বানিয়ে দিয়েছে।
বিজোড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিরল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সবুজার সিদ্দিক সাগর, সাধারণ সম্পাদক রমাকান্ত রায়, বিজোড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী সরকার।