অসুস্থ্য বাবাকে হাসপাতালে দেখতে এসে লাশ হয়ে ফিরল শারমিন
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: অসুস্থ্য বাবাকে মঙ্গলবার কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করে উন্নতি না হওয়ায় পরে দুপুরের দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে মেডিকেলে জায়গা না হওয়ায় হার্টের রোগী নজরুল ইসলামের (৪৫) শ্যালিকা শাবানা (৪০) ও মেয়ে শারমিন (১১) রাত ৯টার সময় রংপুর সাতমাথা থেকে কুড়িগ্রামের উদ্যোশে সিএনজিতে যাত্রা করে। পথিমধ্যে লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়ি নামক এলাকায় কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকা গামি হিমেল পরিবহন সিএনজিটিকে ধাক্কা দিলে সেটি রাস্তা থেকে জমিতে ছিটকে পরে। সেখানেই মারা যায় শাবানা ও শারমিন।
এঘটনায় দুমড়ে-মুচড়ে যায় সিএনজি। স্থানীয়রা শাবানাকে লালমনিরহাটে এবং শারমিনকে কুড়িগ্রাম হাসপাতালে প্রেরণ করে। এই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় কুড়িগ্রামে ২জন এবং লালমনিরহাটে ৩জনসহ মোট ৫জন মারা যায়। আহত হয় ৭জন। মৃতদের সকলের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ও তারা সিএনজির যাত্রী। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে শারমিন ছাড়াও নাগেশ্বরী উপজেলার মন্দিরের খামার এলাকার আছমত আলীর পূত্র বাবু (১২) এর লাশ সংরক্ষিত রয়েছে।
এছাড়াও লালমনিরহাটে মারা গেছে শারমিনের খালা শাবানা (৪০), ভুরুঙ্গামারীর আক্কাছ আলী ও নাগেশ^রীর মাহাবুবুল হক। এখনো স্বজনরা মরদেহ নিয়ে যায়নি। শারমিনের দাদু কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঠালবাড়ী শিবরাম এলাকার হাসমত আলী মাস্টার কান্ন চেপে বলেন, আমার ছেলে নজরুল ইসলাম বুকে ব্যাথা পেলে তাকে প্রথমে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতারে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রংপুরে ফোর্ড করে ডাক্তাররা।
তার সাথে স্ত্রী, সন্তান ও শ্যালিকাও যায়। রাতে রংপুর মেডিকেলে জায়গা না হওয়ায় তারা সিএনজি করে কুড়িগ্রামে ফিরতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যায়। এখনো অসুস্থ্য বাবা ও মা জানে না তাদের সন্তান এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে। বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পরেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: আনোয়ারুল হক প্রামাণিক জানান, রংপুর থেকে কুড়িগ্রামে আসার সময় লালমনিরহাটের বড়বাড়িতে বাস ও জেএস’র সংঘর্ষে বেশ কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটে। কুড়িগ্রামে গুরুতর দুইজন আহতদের মধ্যে একজন আগেই মারা যায়। পরে আরো একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এছাড়াও আহত ৫ জনের মধ্যে গুরুতর ৩ জনকে রংপুরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহফুজার রহমান জানান, মরদেহ পুলিশের তত্বাবধানে রয়েছে। স্বজনরা এলে বুঝে দেয়া হবে।