অল্প সময়ে কচুর লতি চাষে লাভবান হচ্ছেন পাঁচবিবির কৃষকরা
পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) লতিরাজ কচু জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। কচুর লতি দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। অন্যান্য সবজি চাষের চেয়ে কম অর্থ বিনিয়োগে বেশি লাভবান হওয়ায় প্রতি বছর এ চাষ বাড়ছে। অপরদিকে পাঁচবিবির কচুর লতি কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য,অস্টেলিয়া, ইংল্যান্ড, কানাডা,র্জামানি, ডেনর্মাক,সুইডেন,ও মধ্যপ্রাচ্যসহ প্রায় ২৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ফলে এ অর্থকারি ফসল থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে, যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে দারুণ অবদান রাখছে। আর অল্প সময়ে কচুর লতি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন পাঁচবিবির কৃষকরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৯শ হেক্টর জমিতে কচুর লতি আবাদ করছে।
আর লতি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৪ হাজার মেট্রিক টন। প্রতি বিঘা জমিতে হাল চাষ,শ্রম, সেচ, গোবর, ডিএপি, পটাশ, জিপসাম, ইউরিয়া বাবদ ১৮-২২ হাজার টাকা খরচ করে লতি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮৫ হাজার টাকা। সরেজমিনে দেখা গেছে, ধনঞ্জি, উচনা, কোতোয়ালীবাগ, কড়িয়া, শিমুলতলী, আয়মারসুলপুর, বালিঘাটা,বড়মানিকসহ পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক কচুর লতি চাষ হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ৩-৪ হাজার কেজি কচুর লতি পেয়ে থাকে কৃষকরা।এতে কৃষকদের ভাগ্য অনেকটাই বদলাতে শুরু করেছে। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,পাটাবুকা গ্রামের গরিব চাষি মৃত অমির উদ্দিনের প্রথম উদ্ভাবিত এ লতি শুরুতে ২-১ জন কৃষকের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকলেও পরে দ্রুত বাণিজ্যিক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এ কচুর লতি অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিমান সম্পন্ন হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় পাঁচবিবি উপজেলার এ কচুর লতি এখন জয়পুরহাট সদর, দিনাজপুর, বিরামপুর, নওগাঁর বদলগাছী, যশোরসহ অন্যান্য ২-১ জেলার উপজেলায় বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন হচ্ছে। উপজেলার আয়মারসুলপুর ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের সফল লতি চাষি আবেদ আলী জানান,এপ্রিল-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ মাস এ পুরো মৌসুম হলেও সারা বছর এর ফলন পাওয়া যায়।লতির পাইকার মুমিন ও রনি বলেন পাঁচবিবি বটতলীতে এ লতির বাজার থেকে সিজন টাইমে প্রতিদিন ৬০- ৭০ টন লতি দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন তারা। বর্তমান কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কেজি লতি ২৫-২৮ টাকা দরে ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
কৃষকরা বলেন, এখন রোজা রমজান মাস তাই দাম কম পাওয়া যাচ্ছে।পাঁচবিবিতে উৎপাদিত কচুর লতির প্রধান পাইকারী বাজার ঢাকার কারওয়ান বাজার। এছাড়া যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, বাইপাইল, টাঙ্গাইল, দৌলতপুর, রাজশাহী, নাটোর,রংপুর, ঠাকুরগাঁ, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে যাচ্ছে পাঁচবিবির কচুর লতি। পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, আমি নতুন এসেছি তবে শুনেছি পাঁচবিবির কচুর লতি অনেক সুস্বাদু।এ জন্য এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।